দিল্লি সালতানাতের ইতিহাসের উৎসসমূহ

দিল্লি সালতানাতের ইতিহাসের উৎসসমূহ, কামিলাৎ তারিখ, তারিখ-ই গাজিদা, জুয়ামিনুল হিকায়াত, তারিখ-ই সিন্দ, খাওয়াজিন-উল ফুতুহ, তাবাকাত-ই নাসিরী, তাজ-উল ম
Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

দিল্লি সালতানাতের ইতিহাসের উৎসসমূহ


দিল্লি সালতানাতের

উপস্থাপনা: 

দিল্লি সালতানাতের ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সমসাময়িককালের উৎসের ওপর নির্ভর করতে হয়। আধুনিক ঐতিহাসিকগণ মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাসের পূর্ণাঙ্গ ঐতিহাসিক তথ্যের বহু উৎস আবিষ্কার করেছেন। 

এসব উৎসের দ্বারা মধ্যযুগীয় ভারতের প্রশাসন, মুঘল ও সুলতানি আমলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। এসবের দ্বারা মধ্যযুগীয় ভারতের ধারাবাহিক ইতিহাস পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়েছে। ঐতিহাসিক পানিকর তাঁর A Survey in Indian History গ্রন্থে বলেন— An area so welled off and isolated inevitable developed peculiarities and special characteristics which constitute the differentiating marks of civilization. 

অর্থাৎ, একটি বিচ্ছিন্ন অঞ্চলের অপরিহার্য উন্নয়নের গতিধারার কতিপয় বিশেষ বৈশিষ্ট্য সভ্যতার পৃথকীকরণের নিদর্শন স্থাপন করে।” ■ দিল্লি সালতানাতের ইতিহাসের উৎস/উপাদানসমূহ

দিল্লি সালতানাতের ইতিহাসের উৎস-উপাদান সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো:

ক. গ্রন্থাবলি: 

দিল্লি সালতানাতের ইতিহাস রচনায় মুসলমানদের লেখা গ্রন্থাবলি অত্যন্ত মূল্যবান উপাদান। এগুলো সাধারণত আরবি ও ফারসি ভাষায় রচিত। নিম্নে মধ্যযুগীয় ভারতীয় ইতিহাসের উৎস-উপাদান হিসেবে বিবেচিত বিভিন্ন গ্রন্থের বিবরণ দেয়া হলো

কামিলাৎ তারিখ : 

কামিলাৎ তারিখ মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাসের আরেকটি মূল্যবান গ্রন্থ। গ্রন্থকার এ গ্রন্থে মুহাম্মদ ঘুরীর রাজত্বকালের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বর্ণনা দিয়েছেন। তাই মুহাম্মদ ঘুরীর রাজত্বকাল ও মধ্য এশিয়া সম্পর্কিত বহু তথ্য জানার জন্য এ গ্রন্থটি অত্যন্ত গুরুত্ববহ।

২. তারিখ-ই গাজিদা : 

১৩২৯ খ্রিস্টাব্দে হামদুল্লাহ মাস্তোকী কাজাবনী ‘তারিখ-ই ... গাজিদা' গ্রন্থটি রচনা করেন। এ গ্রন্থে ঘুর, গজনী ও ভারতের সুলতানের পরিচয় পাওয়া যায়। গ্রন্থকার তাঁর নিজস্ব ও স্বতন্ত্র দৃষ্টিকোণ থেকে ভারতের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন।

৩. জুয়ামিনুল হিকায়াত:

নুরুদ্দিন মুহাম্মদ উফী রচিত 'জুয়ামিনুল হিকায়াত' গ্রন্থ থেকে নাসিরুদ্দিন কুবাচারের বিরুদ্ধে ইলতুৎমিশের সামরিক অভিযানের প্রাথমিক পরিচয় লাভ করা যায়। এ গ্রন্থের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এতে নাসিরুদ্দিন কুবাচারের বিরুদ্ধে ইলতুৎমিশের সামরিক অভিযানের কাহিনী এবং তার সমরকৌশল ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।

৪. তারিখ-ই সিন্দ : 

‘তারিখ-ই সিন্দ' গ্রন্থখানি মীর মুহাম্মদ মাসুম কর্তৃক যোলো শতকে রচিত। এ গ্রন্থে আরবদের সিন্ধু অভিযানের সময় থেকে সম্রাট আকবরের রাজত্বকাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি লিপিবদ্ধ রয়েছে। আরবদের সিন্ধু অভিযানের পটভূমি এবং মুহাম্মদ বিন কাসিমের সাফল্যের কারণগুলো এতে বর্ণনা করা হয়েছে।

৫. খাওয়াজিন-উল ফুতুহ : 

আমীর খসরু রচিত 'খাওয়াজিন-উল ফুতুহ' একটি মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাসের অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত। তিনি জালালউদ্দিন খিলজী থেকে মুহাম্মদ বিন তুঘলক পর্যন্ত দিল্লির সুলতানদের সমসাময়িক ছিলেন। তিনি বহু উল্লেখযোগ্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তাই তাঁর বিবরণীর ঐতিহাসিক মূল্য অনস্বীকার্য। 

'খাওয়াজিন-উল ফুতুহ' গ্রন্থে আলাউদ্দিন খিলজীর দাক্ষিণাত্য, বরঙ্গল ও মেবার অভিযান, তাঁর প্রশাসনিক সংস্কার, মুঘল আক্রমণ প্রভৃতি বিষয়ের বিবরণ বর্ণিত হয়েছে। তাঁর অন্যান্য ঐতিহাসিক গ্রন্থের মধ্যে 'কিরান-উস সাদাইন', 'মিফতাহ-উল ফুতুহ', ‘ইজাজে খসরু' ও ‘তুঘলকনামা' বিশেষ পরিচিত।

৬. তাবাকাত-ই নাসিরী : 

মিনহাজ-উস সিরাজ রচিত 'তাবাকাত-ই নাসিরী মধ্যযুগীয় ইতিহাস সংবলিত দিল্লি সালতানাত সম্পর্কিত একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। এ গ্রন্থে বাংলা-উড়িষ্যার বিজয় কাহিনী, ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস প্রভৃতির বর্ণনা রয়েছে। গ্রন্থটি মূলত নাসিরউদ্দিনের রাজত্বকালের এক অতি মূল্যবান ইতিবৃত্ত ।

৭. তাজ-উল মাসীর : 

হাসান নিজামী রচিত 'তাজ-উল মাসীর' মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাসের আরেকটি মূল্যবান দলীল। মুহাম্মদ ঘুরী থেকে ইলতুৎমিশ পর্যন্ত যাবতীয় ইতিহাস এতে পাওয়া যায়। এ গ্রন্থে রাজনৈতিক বর্ণনার সাথে সাথে ভারতীয় আবহাওয়া, পরিবেশ, আচার-অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, পোশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায় ।

৮. তারিখ-ই ফিরোজ শাহী : 

জিয়াউদ্দিন বারানি রচিত 'তারিখ-ই ফিরোজ শাহী' গ্রন্থখানি এক অমূল্য সম্পদ। জিয়াউদ্দিন বারানি নিজেই মুহাম্মদ বিন তুঘলক ও ফিরোজ শাহ তুঘলকের সভাসদ ছিলেন। তিনি সুলতান বলবনের সিংহাসন লাভের সময় থেকে (১২৬৬ খ্রি.) শুরু করে সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের শাসনামলের প্রথম ছয় বছর পর্যন্ত (১৩৫৭ খ্রি.) সময়ের ইতিহাস রচনা করেন। 

আলাউদ্দিন খিলজী ও মুহাম্মদ বিন তুঘলকের রাজস্ব সংস্কারগুলোর বিস্তারিত বিবরণ এতে লিপিবদ্ধ আছে। শামস-ই সিরাজ আফিফ রচিত 'তারিখ-ই ফিরোজ শাহী' গ্রন্থে সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক কর্তৃক বাংলাদেশ আক্রমণের বিস্তারিত ঘটনা উল্লেখ রয়েছে।

৯. মুনসাত-ই মহরা : 

মধ্যযুগের ভারতীয় মুসলমানদের ইতিহাস জানতে আইন উল-মুলক রচিত ‘মুনসাত-ই মহরা' গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বিবেচিত। এ গ্রন্থে সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। তিনি একজন ন্যায় বিচারক ও উদার শাসক হিসেবে ইতিহাসে বিখ্যাত।

১০. তারিখ-ই মুবারক শাহী : 

সুলতান মুবারক শাহের রাজত্বকালে (১৪২১-১৪৪৩ খ্রি.) ইয়াহিয়া বিন আহম্মদ বিন আবদুল্লাহ সরহিন্দি 'তারিখ-ই মুবারক শাহী গ্রন্থটি রচনা করেন। এতে সুলতান মুহাম্মদ ঘুরী থেকে ১৪২৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দিল্লির সুলতানদের ইতিহাস লিখিত হয়েছে। বাংলার ইতিহাস সম্পর্কেও বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এ গ্রন্থ থেকে অবগত হওয়া যায় ।

১১. তারিখ-ই শেরশাহী : 

আব্বাস খান শেরওয়ানী রচিত 'তারিখ-ই-শেরশাহী' গ্রন্থখানি ভারতবর্ষের মধ্যযুগীয় ইতিহাসের উপাদান হিসেবে অন্যতম। সমসাময়িক ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে তাঁর এ গ্রন্থটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এতে সৈয়দ, লোদী ও শূর শাসনামলের বর্ণনা লিপিবদ্ধ হয়েছে।

১২. তারিখ-ই ফিরিশতা : 

সুলতান ইবরাহীম আদিল শাহের সময়ে সুলতানি আমলের বিবরণ সংবলিত 'তারিখ-ই ফিরিশতা' গ্রন্থটি রচনা করেন আবুল কাসিম ফিরিশতা। এ গ্রন্থটি মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। এতে বাংলাদেশের ইতিহাসসহ সমগ্র ভারতবর্ষের ইতিহাস লিপিবদ্ধ রয়েছে।

১৩. ফুতুহ-উস সালাতীন : 

১৩৪৯ খ্রিস্টাব্দে খাজা আবদুল মালিক ইসামী রচিত ‘ফুতুহ-উস-সালাতীন' গ্রন্থটি মধ্যযুগীয় ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম উপাদান । মহাকাব্য শাহনামার অনুকরণে এটি লেখা বলে একে ‘শাহনামা-ই হিন্দ' বলা • হয়। 

এটি এগারো শতক থেকে চৌদ্দ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত মুসলিম ভারতের একটি সুন্দর ঐতিহাসিক কাব্যগ্রন্থ। এতে মুহাম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালের (১৩২৫-৫১ খ্রি.) ঘটনাবলির বিবরণ রয়েছে।

১৪. সরকারি দলীল-দস্তাবেজ ও চিঠিপত্র : 

সুলতানি ও মুঘল আমলের সরকারি দলীল-দস্তাবেজ ও ব্যক্তিগত চিঠিপত্র মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষের ইতিহাস জানতে বিশেষ সহায়তা করে। মুঘল সম্রাটদের সরকারি নথিপত্র বিশেষভাবে সংরক্ষিত ছিল। এসব নথিপত্র থেকে মধ্যযুগীয় ভারতের প্রশাসনের বিভিন্ন চিত্র পাওয়া যায়। 

সম্রাটদের ব্যক্তিগত চিঠিপত্র এবং দিনপঞ্জি অনেক সময় ইতিহাসের উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। ‘রুকত-ই আলমগিরী' গ্রন্থে আওরঙ্গযেবের ১৮১টি চিঠি পাওয়া যায়। এসব চিঠি থেকে মুঘল শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

১৫. আদমশুমারি : 

মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষের ইতিহাস পুনর্গঠনে সে সময়কার আদমশুমারি ও অন্যান্য পরিসংখ্যান অন্যতম উৎস। গ্যাজেটিয়ার ও বিভিন্ন পরিসংখ্যান রিপোর্ট, গ্রামবাংলার বংশানুক্রমিক ঘটনা, সংরক্ষিত স্থানীয় ঐতিহ্যসমূহ থেকে তৎকালীন ইতিহাস সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য জানা যায়। আদমশুমারি ও পরিসংখ্যান থেকে বিভিন্ন বিষয়ে সঠিক তথ্য নিয়ে ইতিহাস পুনর্গঠন সহজতর হয়।

১৬. পাণ্ডুলিপি : 

পাণ্ডুলিপি থেকে সুলতানি ও মুঘল প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা বিশেষ করে সুবা, সরকার ও রাজমহলের বিস্তারিত আলোচনা পাওয়া যায়। মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে প্রাপ্ত পাণ্ডুলিপির মধ্যে 'দসতুর-উল আলম-ই আওরঙ্গযেবী', 'দিভান পসনদ', সাদিক খানের 'তারিখ-ই শাহজাহানী', চন্দ্রাভন ব্রাহ্মণের 'চাহার চামন', শাকিব খান রচিত 'তারিখ-ই শাকিবখানী', ঠাকুর লালের 'দসতুর-উল আলম-ই শাহানশাহী', 'মিরাট-ই আহমদী', 'মিরাট-উল ইসতিলাহ' প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। 

এসব পাণ্ডুলিপি থেকে মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষের রাজকর্মচারী, মনসবদারদের উপাধি প্রদানের নিয়ম, শাসনব্যবস্থা, বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিবরণ পাওয়া যায়। তাই দেখা যায়, মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষের ইতিহাসের উৎস হিসেবে পাণ্ডুলিপি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।

১৭. প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন : 

ইংরেজ ঐতিহাসিক লেনপুল মনে করেন, “মুসলিম আমলের মুদ্রাগুলো সে যুগের ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী।” তিনি মনে করেন, মুদ্রাগুলো রাজার বংশ-পরিচয়, ব্যক্তিগত রুচি, সিংহাসনে আরোহণ কাল, রাজ্যসীমা, রাজার ধর্ম প্রভৃতি বিশেষ ঘটনাবলি জানতে সাহায্য করে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষের মসজিদ, প্রাসাদ, দুর্গ, স্মৃতিস্তম্ভ প্রভৃতি ইতিহাসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

এগুলো থেকে সমকালীন ভারতবর্ষের স্থাপত্য ও শিল্পকলার বিশেষ পরিচয় পাওয়া যায়। লেনপুলের ভাষায়, “দিল্লি সালতানাতের একটি সঠিক ইতিহাস তৈরির জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।” সুতরাং মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষের ইতিহাসের জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের অবদান কম নয় ।

পর্যটকদের বর্ণনা : 

মধ্যযুগে ভারতবর্ষে যে সকল পর্যটকের আগমন ঘটেছিল তাদের মধ্যে ইবনে বতুতা অন্যতম। তিনি আফ্রিকার মরক্কো থেকে ভারতবর্ষে এসে দীর্ঘ আট বছর (১৩৩৪-১৩৪২ খ্রি.) অবস্থান করেন। তিনি তাঁর 'রাহলা' (ভারত ভ্রমণ) গ্রন্থে মুহাম্মদ বিন তুঘলকের শাসনামল, ভারতীয়দের আচার ব্যবহার এবং তাদের সাধারণ অবস্থার এক মনোজ্ঞ বিবরণ তুলে ধরেন। 

মধ্যযুগে ভারতবর্ষে চৈনিক পর্যটক মাহুয়ান ও পারস্যের আবদুর রাজ্জাক ভ্রমণ করেন। এ সময় ইতালীয় পর্যটক নিকোলা-ডি কন্টি ও মার্কো পোলো দক্ষিণ ভারতে আগমন করেন। তাদের বর্ণনায় ঐ এলাকার সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার সার্বিক চিত্র ফুটে ওঠে। এছাড়া পর্তুগিজ পর্যটক পায়েজ, বার্বোসা, নুনিজ ও রুশ পর্যটক নিকিতিনির বর্ণনা থেকেও মধ্যযুগীয় ভারতের অনেক মূল্যবান তথ্য পাওয়া যায়। 

মুঘল আমলের বিখ্যাত ইউরোপীয় পর্যটকদের মধ্যে র‍্যালফ ফিচ, টেরি, পার্টাস, ট্যাভার্নিয়ার, বার্নিয়ার, মানুচি, টমাস রো, ক্যাবোরি, ভাস্কো-দা-গামা, ভারথেমা, সিজার ফ্রেডারিক, জোয়াও দ্য বেরস প্রমুখের বর্ণনা থেকে সে সময়ের জনসাধারণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে মূল্যবান ও বিস্তারিত বর্ণনা লাভ করা যায় ।

উপসংহার : 

দিল্লি সালতানাতের ইতিহাস জানতে সাহিত্য বিষয়ক উপাদান তথা গ্রন্থাবলি, পর্যটকদের বর্ণনা, সরকারি দলীল-দস্তাবেজ, চিঠিপত্র এবং প্রত্নতাত্ত্বিক উৎসের ওপর নির্ভর করতে হয়। কারণ এ সময় কোনো ধারাবাহিক ইতিহাস রচনা করা হয়নি। 

তদুপরি সমকালীন ঘটনাপঞ্জির যে উৎস ও উপকরণ পাওয়া গেছে তা থেকে ভারতের মুসলমানদের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার একটি বাস্তব চিত্র লক্ষ করা যায় ।

নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Telegram Group Join Now
Our Facebook Page Join Now
Class 8 Facebook Study Group Join Now
Class 7 Facebook Study Group Join Now
Class 6 Facebook Study Group Join Now

Post a Comment