আমাদের লোকশিল্প - অষ্টম শ্রেণি - সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)

আমাদের লোকশিল্প - অষ্টম শ্রেণি - সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF) | Amader Lokoshilpo : Creative Questions and Answers - Class VIII
Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

 

আমাদের লোকশিল্প - অষ্টম শ্রেণি - সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF) | Amader Lokoshilpo : Creative Questions and Answers - Class VIII

আমাদের লোকশিল্প - অষ্টম শ্রেণি - সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)

প্রশ্ন -১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

পলাশপুর গ্রামের রহিমা। দরিদ্র হলেও শিল্পী মনের অধিকারী। ছোটবেলা থেকেই সে বাঁশ, বেত দিয়ে সংসারে প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস তৈরি করতো। কিন্তু আচমকা একদিন তার স্বামী মারা গেলে দুই সন্তান নিয়ে পথে বসে রহিমা। উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে সুঁই-সুতা হাতে তুলে নেয় সে। তার সুখ-দুঃখের জীবনালেখ্য রহিমার দীঘল সুতার টানে ভাষা দিতে থাকে। একদিন বেসরকারি একটি সংস্থার মাধ্যমে তার সূচিশিল্পগুলো যায় বিদেশে এবং মোটা অঙ্কের অর্থপ্রাপ্তির পাশাপাশি প্রচুর সুনাম অর্জন করে।

ক. কোন এলাকার ‘মাদুর’ সকলের কাছে পরিচিত?

খ. ‘ঢাকাই মসলিনের কদর ছিল দুনিয়াজুড়ে’- বলতে কী বোঝায়?

গ. স্বামীর মৃত্যুর পর রহিমার কাজটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে কীসের প্রতিনিধিত্ব করে? বর্ণনা কর।

ঘ.দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রহিমার অবদান ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন কর।

 

  ১নং প্রশ্নের উত্তর

  

ক. খুলনার ‘মাদুর’ সকলের কাছে পরিচিত।

খ. ‘ঢাকাই মসলিনের কদর ছিল দুনিয়াজুড়ে’ বলতে ঢাকাই মসলিনের জনপ্রিয়তার বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে।

 মিহি সুতা আর অপূর্ব দক্ষতায় বোনা ঢাকাই মসলিন দেশের গÐি ছাড়িয়ে বিদেশেও আলোড়ন তুলেছিল। ঢাকা শহরের অদূরে ডেমরা এলাকার তাঁতিরা মসলিন কাপড় বুনত। ঢাকাই মসলিন তৎকালীন মোগল বাদশাহদের বিলাসের বস্তু ছিল। এ কাপড় এতই সূ² ছিল যে, ছোট একটি আংটির ভেতর দিয়ে কয়েকশ গজ মসলিন প্রবেশ করিয়ে দেয়া সম্ভব হতো। অসাধারণ এ বৈশিষ্ট্যের কারণেই ঢাকাই মসলিনের কদর ছিল দুনিয়াজুড়ে।

গ. স্বামীর মৃত্যুর পর রহিমার কাজটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে নকশিকাঁথা তৈরির বিষয়টির প্রতিনিধিত্ব করে।

 

নকশিকাঁথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ কাঁথার প্রতিটি সূচের ফোঁড়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকে এক-একটি পরিবারের কাহিনী। ‘আমাদের লোকশিল্প’, প্রবন্ধে লুপ্তপ্রায় নকশিকাঁথার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। গ্রামের মেয়েরা প্রধানত বর্ষাকালে একসাথে বসে নকশিকাঁথা সেলাই করে। এক একটি কাঁথার প্রতিটি সূচের ফোঁড়ের মাধ্যমে তারা ফুটিয়ে তুলত আপন পরিবেশ ও জীবনের গল্প।

 

উদ্দীপকে পলাশপুর গ্রামের রহিমা তার স্বামীর মৃত্যুর পর দুই সন্তানকে নিয়ে পথে বসে। সৃজনশীল ও শিল্পীমনের অধিকারী রহিমা সংগ্রামের পথ ধরে সুঁই-সুতা হাতে তুলে নেয়। তার দীঘল সুতার টানে নকশি কাঁথায় ভাষা পেতে থাকে নিজস্ব সুখ-দুঃখের জীবনালেখ্য। এক সময় অর্থের পাশাপাশি এসব নকশিকাঁথা তাকে যথেষ্ট সুনামও এনে দেয়। এ থেকে বোঝা যায় রহিমার কাজটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে উল্লিখিত নকশিকাঁথা তৈরির ঐতিহ্যের দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে।

 

ঘ. ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের বক্তব্যের আলোকে বলা যায়, যথার্থভাবে লোকশিল্পের প্রসার ঘটাতে পারলে উদ্দীপকের রহিমার অবদান আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে।

 

 আমাদের দেশের মানুষ সাধারণত অবসর কাটানোর জন্যই লোকশিল্পের চর্চা করে। তবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের যথার্থ বিকাশ সাধনের মধ্যে দিয়ে একটি স্বল্পোন্নত দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হতে পারে। যেমনটি ঘটেছে উদ্দীপকের রহিমার কাজের মাধ্যমে।

 

আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকশিল্প ও লোক ঐতিহ্যের বর্ণনা স্থান পেয়েছে। আর এ শিল্প সম্পর্কে বলা হয়েছে যথাযথ সংরক্ষণ ও স¤প্রসারণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটানো সম্ভব। উদ্দীপকের রহিমার কাজটি কুটির শিল্পের একটি অন্যন্য উদাহরণ। রহিমা সূচিশিল্পের মাধ্যমে তার অবস্থার উন্নতি সাধন করেছে। এর সাথে সাথে দেশের বাইরে তার শিল্পকর্ম রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখছে। আপন জীবনের আনন্দ-বেদনা, দুঃখকষ্টকে সুইয়ের ফোঁড়ে সে কাঁথায় গেঁথে রেখেছে। মনের মাধুরী মিশে গিয়ে সে কাঁথাগুলো হয়ে উঠেছে শিল্পকর্ম। এভাবে তার এ কাজ কুটিরশিল্প থেকে শিল্পকর্ম অর্থৎ লোকশিল্পের পর্যায়ভুক্ত হয়েছে আর একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে বিশ্ববাজারে জড়িয়ে পড়ায় সে নিজে এবং দেশের অর্থনীতি উপকৃত হয়।

 

 দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে রহিমাদের মতো নারীদের ভ‚মিকা খুবই কার্যকরী। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধতে লোক শিল্পের প্রকৃত ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কথা বলা হয়েছে।

 

 

প্রশ্ন -২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

 

সেঁজুতির স্কুলে চলছিল বার্ষিক লোকশিল্প মেলা। সেঁজুতি জমা দেয় একটা নকশিকাঁথা। এ কাঁথায় ফুটিয়ে তোলে বর্ষা-প্রকৃতি এবং বিরহকাতর একজন নারীর জীবনগাথা। দর্শনার্থী, বিচারক এবং প্রতিযোগী সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখেন এটি। একজন মন্তব্য লেখেন, আমাদের লোকশিল্প যে সমৃদ্ধ তা বলে শেষ করার মতো নয়। কিš ‘ সময় ও রুচির পরিবর্তনে তা আজ প্রায় ধ্বংসোন্মুখ। আমাদের সকলের এখনই এর প্রতি নজর দেয়া উচিত। নইলে অচিরেই এ শিল্প ধারাকে আমরা হারাব।

ক. শিল্পগুণ বিচারে আমাদের কুটিরশিল্প কোন শিল্পের মধ্যে পড়ে?

খ. বর্ষাকালে নকশিকাঁথা তৈরির জন্য উপযুক্ত সময় কেন?

গ. সেঁজুতির এহেন উদ্যোগ আমাদের লোকশিল্পের যে বিশেষ দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ.উদ্দীপকে লোকশিল্প বাঁচিয়ে রাখার যে তাগিদ অনুভ‚ত হয়েছে তা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের লেখকের বক্তব্যকে সমর্থন করে কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

  

২নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. শিল্পগুণ বিচারে আমাদের কুটিরশিল্প লোকশিল্পের মধ্যে পড়ে।

 

খ. বর্ষাকালে পানি থই থই করে, ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া যায় না। যার ফলে বর্ষাকাল নকশিকাঁথা তৈরির জন্য উপযুক্ত সময়।

 বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে বাইরে যাওয়া যায় না। এ সময় গ্রামের মেয়েরা ঘরের কাজ শেষ করে দুপুরের খাওয়ার পর সবাই নকশিকাঁথা সেলাই করতে বসে। সুযোগ পেলে পাড়া-প্রতিবেশীরাও যোগ দেয় তাদের সঙ্গে। বর্ষার অবসরে গ্রামীণ মেয়েরা নকশিকাঁথা সেলাইয়ের উৎসবে মেতে ওঠে। বর্ষাবন্দি পরিবেশ গ্রামের মেয়েদের নকশিকাঁথা সেলাইয়ের একটি অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। তাই বর্ষাকালকে নকশিকাঁথা তৈরির উপযুক্ত সময় বলা হয়।

 

গ. সেঁজুতির উদ্যোগ ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে নকশিকাঁথার সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের দিকটির প্রতিনিধিত্ব করে।

 

আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। এর মধ্যে নকশিকাঁথা অন্যতম। বাঙালি নারীদের শিল্প চেতনা নকশিকাঁথার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়। এতে সাধারণত বর্ষার প্রকৃতি এবং বিরহকাতর জীবনগাথাকে তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে নকশিকাঁথা নামক শিল্পটির প্রতি বাঙালি নারীর অকৃত্রিম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কিন্তু সময় ও রুচির পরিবর্তনে এ শিল্প আজ প্রায় ধ্বংসোন্মুখ। লেখক এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা কামনা করেছেন আলোচ্য প্রবন্ধে।

 

আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের বর্ণনার মতোই উদ্দীপকের সেঁজুতি লুপ্তপ্রায় লোকশিল্প নকশিকাঁথার কদর বুঝতে পেরেছে। ফলে স্কুলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় সে নকশিকাঁথা উপস্থাপন করেছে। এতে দেশীয় শিল্প ও ঐতিহ্যের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। তার এ উদ্যোগ মূলত আমাদের লোকশিল্পের নকশিকাঁথার সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের দিকটির প্রতিনিধিত্ব করেছে।

 

ঘ. উদ্দীপকে লোকশিল্প বাঁচিয়ে রাখার যে তাগিদ অনুভ‚ত হয়েছে, তা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বর্ণিত লেখকের বক্তব্যকে পুরোপুরি সমর্থন করে।

 

আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকশিল্প ও লোক ঐতিহ্য সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। লেখকের বর্ণনার মাধ্যমে লোকশিল্পগুলোর লুপ্তপ্রায় অবস্থাটি ফুটে উঠেছে। যা পাঠ করে পাঠকসহ সবাই উদ্বুদ্ধ হবে লোকশিল্প সংরক্ষণে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে আমাদের সেই ঐতিহ্য আজ বিলুপ্ত হতে চলেছে। ফলে আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে। লেখক সবাইকে এ অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হতে তাগিদ দিয়েছেন।

 

উদ্দীপকে সেঁজুতি বাংলার লোকশিল্পের অন্যতম নিদর্শন নকশিকাঁথাকে সবার সামনে উপস্থাপন করে। এসব নকশিকাঁথায় ফুটিয়ে তোলা হয় বর্ষার প্রকৃতি এবং বিরহকাতর নারীর জীবনগাথা। এ লোকশিল্পের সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সবাইকে। সময় ও রুচির পরিবর্তনে এ লোকশিল্প যে ধ্বংস হতে চলেছে সেঁজুতি তা অনুধাবন করতে পেরেই মেলায় এ শিল্পটি উপস্থাপন করেছে। উদ্দীপক ও পঠিত প্রবন্ধের মূল ভাবনা, গ্রামীণ লোকশিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে আমাদের পুরোনো ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে- আমাদের লোকশিল্পের একটি ইতিহাস ও ঐতিহ্য ছিল এবং আমরা সচেতনভাবে কাজ করলে তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। উদ্দীপকের সেঁজুতি এবং মেলায় নকশিকাঁথা দেখে মন্তব্যকারী উভয়েই লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ অনুভব করেছে, যা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের লেখকের বক্তব্যকেই সমর্থন করে।


 


প্রশ্ন -৩ :নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

 

ঈদে রকিব সাহেব তার মেয়ে শিখুর জন্য নারায়ণগঞ্জের নোয়াপাড়ায় তৈরি শাড়ি কিনে দেন। কিন্তু শিখু শাড়িটি ভারতীয় না হওয়ায় খুবই মর্মাহত হয়। রকিব সাহেব শাড়িটি কেনার কারণ বুঝিয়ে বললে শিখু নিজের ভুল বুঝতে পারে। সে ঈদের দিনে আনন্দের সাথে শাড়িটি পরে এবং তার বান্ধবীরা শাড়িটির প্রশংসা করে।

ক. কোন জেলার কাঠের নৌকা বিখ্যাত?

খ. ‘নকশা, রং ও বুননকৌশল সবই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য অনুযায়ী হয়।’ - ব্যাখ্যা কর। ২

গ. উদ্দীপকে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের যে শিল্পটির পরিচয় ফুটে উঠেছে তার বর্ণনা দাও। ৩

ঘ.উদ্দীপকের রকিব সাহেবের মানসিকতা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের লেখকের মূল বক্তব্যকে সমর্থন করে। -সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪

  

৩নং প্রশ্নের উত্তর

 

ক. বরিশাল জেলার কাঠের নৌকা বিখ্যাত।

 

খ. চাকমা, কুকি, মুরং ও মনিপুরী মেয়েরা নিজস্ব নকশা ও বুননকৌশল অনুযায়ী ঐতিহ্যবাহী কাপড় তৈরি করে।

 পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীরা তাদের পরিধেয় বস্তু হাতে বুনে ব্যবহার করে। এই কাপড়গুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য এদের নকশা এবং বুননকৌশল। এ ছাড়া এসব কাপড় বর্ণিল রঙে রাঙানো থাকে। কাপড়গুলো অপেক্ষাকৃত মোটা বুনন এবং টেকসই হয়।

 

গ.  উদ্দীপকে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের জামদানি শিল্পের পরিচয় ফুটে উঠেছে।

 কামরুল হাসান রচিত ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে জামদানি শাড়ির কথা বলা হয়েছে যা যুগ যুগ ধরে জামদানি শিল্পের ঐতিহ্য সমুন্নত রেখেছে শুধু সৃজনশীল শিল্পী মনের সাহায্যে।

 

উদ্দীপকের রকিব সাহেব মেয়ে শিখুর জন্য জামদানি শাড়ি কিনে আনলে সে এর ঐতিহ্য বা শিল্পগুণ সম্পর্কে ধারণা না থাকায় শাড়ি পেয়ে তেমন খুশি হতে পারেনি। কিন্তু বাবার কাছে জামদানি শাড়ির অতীত গৌরবময় ইতিহাস শোনার পর তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হয়। সে নিজের ভুল বুঝতে পেরে শাড়িটির প্রতি আকৃষ্ট হয়। নিজেদের লোকশিল্পের প্রতি অজ্ঞানতার কারণেই সে প্রথমে এই শিল্পদ্রব্য অবহেলা করে। তাই বলা যায়, আমাদের লোকশিল্পের অন্যতম উপাদান জামদনি শাড়ি, যা উদ্দীপকেও সমানভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

 

ঘ. “উদ্দীপকের রকিব সাহেবের মানসিকতা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের লেখকের মূল বক্তব্যকে সমর্থন করে” উক্তিটি যথাযথ।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধ অনুসারে আমাদের লোকশিল্পের একটি সমৃদ্ধ অতীত আছে। কিন্তু কালের বিবর্তনে লোকশিল্পের অনেকাংশই হুমকির সম্মুখীন। কলকারখানায় তৈরি জিনিসের সহজলভ্যতার পাশাপাশি লোকশিল্পের গুরুত্ব ও ঐতিহ্য সম্পর্কে অজ্ঞতা ও লোকশিল্পের এ দুর্দশার জন্য দায়ী। লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের দায়িত্ব আমাদের সবার।

 

উদ্দীপকের শিখু আমাদের ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প সম্পর্কে অবগত নয়। তাকে জামদানি শাড়ির সমৃদ্ধ অতীত সম্পর্কে জানালে সে এর গুরুত্ব বোঝে। এ গুরুদায়িত্ব পালন করেন তার বাবা রকিব হোসেন। লোকশিল্পের সংরক্ষণ ও প্রসারের জন্য এর নাগরিকদের ভালোবাসা থাকতে হবে। হৃদয় দিয়ে অনুভব না করলে এ শিল্প হারিয়ে যাবে। রকিব সাহেবের মানসিকতা লোকশিল্প সংরক্ষণের জন্য অনুক‚ল।

 তাই বলা যায়, রফিক সাহেবের মানসিকতা ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের লেখকের মূল বক্তব্যের সাথে একই ধারায় প্রবাহিত।

 

 

প্রশ্ন -৪ :নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :


 বউদের আজ কোনো কাজ নাই, বেড়ায় বাঁধিয়ে রশি

 সমুদ্রকলি শিকা বানাইয়া নীরবে দেখিছে বসি।

 কেউবা রঙিন কাঁথায় মেলিয়া বুকের স্বপনখানি,

 তারে ভাষা দেয় দীঘল সুতার মায়াবী আখর টানি।

ক. খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব কী?

খ. জামদানি শাড়িকে গর্বের বস্তু বলা হয়েছে কেন?

গ. উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের কোন শিল্পের প্রতিনিধিত্ব করে? তাদের স্বরূপ বিশ্লেষণ কর। ৩

ঘ.“উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের সামগ্রিক প্রতিচ্ছবি নয়।” -যুক্তিসহ আলোচনা কর।  

 

 ৪নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. খাদি কাপড়ের বৈশিষ্ট্য এটি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি।

 

খ. জামদানি শাড়ি দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করায় জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু।

 ঢাকার বিখ্যাত মসলিন কাপড় এখন আর এই বাংলায় তৈরি হয় না। যে তাঁতিরা মসলিন বুনতো তাদেরই বংশধররা আজ জামদানি শাড়ি তৈরি করছে। জামদানি তাঁতে বোনা, ফুল তোলা অত্যন্ত মিহি শাড়ি। এ শাড়ির চাহিদা ও সমাদর শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিদেশেও এর সমাদর ও চাহিদা যথেষ্ট। ফলে আমাদের শিল্পগুণ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে, যা আমাদের গর্বের বিষয়।

 

গ. উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের নকশিকাঁথা ও শিকা তৈরি লোকশিল্পের প্রতিনিধিত্ব করে।

 নকশিকাঁথা এই বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন লোকশিল্পের উদাহরণ। বর্ষার দিনে মেয়েরা ঘরে বসে গল্পকাহিনী করে আর হাতে থাকত সুই-সুতো, পাটের দড়ি। তারপর পাটের দড়ি দিয়ে রঙিন শিকা বানিয়ে তাতে শিল্পের ছোঁয়া দিচ্ছে। এছাড়া গ্রামের মেয়েরা বুনে চলে নিজের স্বপ্নগুলো কাঁথার গায়ে। জাদুকরী ছোঁয়ায় প্রতিটি কাঁথা হয়ে ওঠে জীবন্ত।

 

উদ্দীপকেও এই একই ধরনের একটি চিত্রকল্প প্রকাশিত হয়েছে। বউয়েরা কেউ রঙিন কাঁথায় মেলে ধরছে তার বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখা স্বপ্নকে। গাঁয়ের বধূর মায়াবী সুতার টানে ফুটে উঠছে ভাষা। নকশি কাঁথা একটি গল্প বলছে যা মিহি হাতের সুতায় বোনা দিন যাপনের কথা মনে করিয়ে দেয়, তাই বলা যায় উদ্দীপকটিতে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের দুটি বিশেষ শিল্পের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে।

 

ঘ. উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের সামগ্রিক প্রতিচ্ছবি নয়- উক্তিটি যথার্থ।

 

 নকশিকাঁথা ও সমুদ্রকলি শিখা তৈরি করা আমাদের গ্রাম বাংলার অতি পুরাতন এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্প। বর্ষার দিনে বধূরা পানের বাটা পাশে নিয়ে গল্পগুজব করতে করতে বুনে চলে নিজের স্বপ্নগুলো নির্জীব কাঁথার গায়ে। প্রতিটি নকশিকাঁথা যেন স্বপ্নের গল্পই বলে চলে। বেড়ার গায়ে পাটের রশি পেঁচিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে বিভিন্ন ধরনের গিঁট, পুঁতি ইত্যাদি দিয়ে  তৈরি করে সমুদ্রকলি শিকা।

 

আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক বিভিন্ন ধরনের শিল্পের প্রতি আলোকপাত করেছেন। এর মাঝে অন্তর্ভুক্ত আছে জামদানি শিল্প, যা পূর্ববর্তী মসলিন শিল্পের উত্তরসূরি। এছাড়াও আছে তাঁতশিল্প, যাতে দেশীয় ঐতিহ্যগত মৌলিক বৈশিষ্ট্য আছে। কুমিল্লার খাদির রয়েছে স্বদেশি আন্দোলনে সম্পৃক্ততার ইতিহাস। আমাদের দেশে কাঁসা এবং পিতলের শিল্প জনপ্রিয়। পোড়ামাটির কাজ, টেপা পুতুল, কাঠের কারুকাজ, খুলনার মাদুর, সিলেটের শীতলপাটি, বাঁশের আসবাবপত্র, কাপড়ের পুতুল ইত্যাদি আমাদের লোকশিল্পের অন্যতম প্রসিদ্ধ দিক।

 আলোচ্য উদ্দীপকে শুধুমাত্র নকশিকাঁথা এবং সমুদ্রকলি শিকা তৈরির পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সুতা দিয়ে বোনা স্বপ্ন অবসর বিনোদন ইত্যাদি বিষয় ফুটে উঠেছে, যা প্রবন্ধের ছোট একটি অংশের ভাব প্রকাশ করে, সমগ্র প্রবন্ধের নয়। তাই বলা যায়, ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আংশিক ভাব আলোচ্য উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে।

 


প্রশ্ন -৫ :নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :


অপু ও তার বন্ধুরা শিক্ষাসফরে গিয়ে মহাস্থান জাদুঘরে মাটির তৈরি নানা রকম তৈজসপত্র, অলংকার, ফুলদানি ও হিন্দু স¤প্রদায়ের বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি দেখে অভিভ‚ত হলো। তারা তাদের শিক্ষক রফিক স্যারকে বলল, স্যার, এদেশের কুমোররা এখনো এ ধরনের দ্রব্য তৈরি করে আমাদের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছে। স্যার বললেন, আমাদের দেশের কুমোরদের এই তৎপরতা শুধু ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে নয়, দারিদ্র্যবিমোচনেও গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে।

ক. ঢাকার কোন জিনিসটি মোগল বাদশাহদের বিলাসের বস্তু ছিল?

খ. কাঁসা-পিতলের জিনিস কীভাবে তৈরি করা হয়?

গ. উদ্দীপকের অপুদের দেখা দ্রব্যদি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে উল্লিখিত যে ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.উদ্দীপকের রফিক স্যারের মন্তব্যটি কী ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধ রচয়িতার প্রত্যাশার প্রতিধ্বনি? তোমার যৌক্তিক মত উপস্থাপন কর।   

 

  ৫নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. ঢাকাই মসলিন মোগল বাদশাহের বিলাসের বস্তু ছিল।

 

খ. মাটির ছাঁচের মধ্যে গলিত কাঁসা ঢেলে তৈরি করা হয় কাঁসা ও পিতলের জিনিস।

 সর্বপ্রথম মাটির ছাঁচে ঢেলে দেয়া হয় গলিত কাঁসা। ধীরে ধীরে এ গলিত ধাতু ঠাণ্ডা হয়ে আসে। তখন ওপর থেকে মাটির ছাঁচটি ভেঙে ফেললেই ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে বদনা, বাটি, গ্লাস, থালা ইত্যাদি। তারপর এগুলো পালিশ করা হয়।

 

গ. উদ্দীপকের অপুদের দেখা দ্রব্যাদি আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধের পোড়ামাটির কাজের ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে।

 পোড়ামাটির কাজের সমৃদ্ধ এক ইতিহাস আছে। পূর্বে পুরাকালের মসজিদ বা মন্দিরের গায়ে নকশাদার যেসব ইট দেখা যায় তা এই শিল্পেরই নিদর্শন। মাটির কলস, হাঁড়ি, পাতিল, সানকি, ফুলদানি, রসের ঠিলা, পিঠা ও সন্দেশের ছাঁচ ছাড়াও হিন্দু স¤প্রদায়ের দুর্গা, সরস্বতী, ²ী ইত্যাদি দেবদেবীর মূর্তি কুমোরের নিপুণ হাতেরই অপূর্ব সৃষ্টি। বর্তমানে আধুনিক রুচির ঘর সাজানোর শৌখিন সামগ্রী সবকিছুই মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে।

 

উদ্দীপকে অপু ও তার বন্ধুরা মহাস্থান যাদুঘরে গিয়ে মাটির তৈরি তৈজসপত্র, অলংকার, বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি দেখে অভিভ‚ত হয়। তাদের দৃষ্টিতে এখনো কুমোররা এই কাজগুলো করে। তাদের শিক্ষক বলেন, কুমোরদের এই কাজ আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে এবং দারিদ্র্যবিমোচনেও ভ‚মিকা রাখতে পারে। কারণ বর্তমানে বিভিন্ন শৌখিন জিনিস মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে, যা আধুনিক মানুষের জীবনযাত্রায় স্থান করে নিচ্ছে।

 

ঘ. ‘উদ্দীপকের রফিক স্যারের মন্তব্যটি’ ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধ রচয়িতার প্রত্যাশার প্রতিধ্বনি। -উক্তিটি যথার্থ।


 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের শিল্পের প্রতি আলোকপাত করেছেন। লেখকের মতে, লোকশিল্পকে স¤প্রসারণ ও সংরক্ষণ করা উচিত। এটি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখতে সক্ষম। কারণ আমাদের হাতে প্রচুর মানবশক্তি আছে যাদের কাজে লাগানো সম্ভব। সুপরিকল্পিত উপায়ে এবং সুরুচিপূর্ণ লোকশিল্প এদের মাধ্যমে তৈরি করে বাজারজাত করলে মৃৎশিল্পের প্রসার ঘটবে, বেকারদের কর্মসংস্থান হবে এবং পুরাতন এই ঐতিহ্য টিকে থাকবে।

     উদ্দীপকের রফিক স্যারের ভাষ্যেও আমরা একই দিকনির্দেশ করা উক্তি পেয়েছি। তার মতে, কুমোররা যে কাজ বহুদিন ধরে করে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছে এ কাজটি যদি আরও পরিকল্পিতভাবে করা যায়। তবে ঐতিহ্য অক্ষুণœ থাকার পাশাপাশি দারিদ্র্যও বিমোচন করতে সহায়ক হবে। মৃৎশিল্পের যে চাহিদা বর্তমানে আছে তা পূরণ করতে পারলেও অর্থনৈতিক দিকের চাপ কিছু হলেও দূরীভ‚ত হওয়া সম্ভব, যা প্রবন্ধে, লেখকের প্রত্যাশা।

 

 উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, রফিক স্যারের মন্তব্যটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের রচয়িতা যে প্রত্যাশা করেছেন তারই প্রতিধ্বনি।

 

 

প্রশ্ন -৬ :নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :


কেউবা রঙিন কাঁথায় মেলিয়া বুকের স্বপনখানি

তারে ভাষা দেয় দীঘল সুতার মায়াবী আখরটানি”জ্জ মি. রাজু পল্লিকবি রচিত এ চরণ দুটি আবৃত্তি করে বলেন,জ্জ “চরণ দুটিতে বর্ণিত শিল্পকর্মটি আমাদের অতীতকে স্মরণ করিয়ে দেয়।”

ক. ঢাকার নবাব পরিবার কী দিয়ে শীতলপাটি তৈরি করিয়েছিলেন? 

খ. মসলিন এক সময়ের অনন্য ও অমূল্য সৃষ্টি ছিল- কেন? বুঝিয়ে লেখ। ২

গ. উদ্দীপকের চরণ দুটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের গ্রামীণ কোন লোকশিল্পের ইঙ্গিত বহন করে? ব্যাখ্যা কর।  

ঘ.‘চরণ দুটিতে বর্ণিত শিল্পকর্মটি আমাদের অতীতকে স্মরণ করিয়ে দেয়’। মি. রাজুর এ মন্তব্যটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। 

 

৬নং প্রশ্নের উত্তর 


ক. ঢাকার নবাব পরিবার হাতির দাঁত দিয়ে শীতলপাটি তৈরি করেছিল।

 

খ. মিহি সুতা আর অপূর্ব দক্ষতার কারণেই মসলিন এক সময়ের অনন্য ও অমূল্য সৃষ্টি ছিল।

 ঢাকাই মসলিন পৃথিবীজুড়ে সমাদৃত ছিল। এ কাপড় এত সূ² সুতা দিয়ে বোনা হতো যে কয়েকশ গজ কাপড় অনায়াসে একটি আংটির ভিতর দিয়ে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া যেত। এ অমূল্য সৃষ্টির জন্য বিখ্যাত ছিল ঢাকার অদূরে ডেমরার তাঁতিরা।

 

গ. উদ্দীপকের চরণ দুটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের নকশিকাঁথার ইঙ্গিত বহন করে।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে আমাদের গ্রামীণ লোকশিল্প নকশিকাঁথার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। নকশিকাঁথা আমাদের গ্রামীণ লোকশিল্পের প্রতীক। বর্ষা মৌসুম নকশিকাঁথা সেলাইয়ের উপযুক্ত সময়। কেননা এ সময় গ্রামীণ মেয়েদের তেমন কোনো কাজ থাকত না। নকশিকাঁথার প্রতিটি ফোঁড়ে ফোঁড়ে লুকিয়ে আছে হাজারো সুখ-দুঃখের কথা।

 

উদ্দীপকেও নকশিকাঁথার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। গ্রামীণ নারীরা মূলত এ কাঁথা সেলাই করে থাকে। কাঁথার প্রতিটি ফোঁড়ে ফোঁড়ে লুকিয়ে থাকে তাদের বিরহ-মিলনের কাহিনী; যা পরবর্তীকালে তাদের কাছে হয়ে উঠে অনন্য, অসাধারণ। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকটি প্রবন্ধের নকশিকাঁথার প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে।

 

ঘ. উদ্দীপকের চরণ দুটিতে বর্ণিত হয়েছে নকশিকাঁথার প্রসঙ্গ, যা আমাদের অতীতকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে নকশিকাঁথার প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। নকশিকাঁথা সাধারণত গ্রামের মেয়েরা সেলাই করে। আর এটি সেলাইয়ের উত্তম সময় বর্ষাকাল। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাদের মতো করে কাঁথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেত। নকশিকাঁথায় সুচের ফোঁড়ে লুক্কায়িত আছে তাদের কত হাসি, কত কান্না, কত বেদনা। এক একটি নকশিকাঁথা যেন একেকটি পরিবারের কাহিনি, তাদের পরিবেশ, তাদের জীবনগাথা। যা তাদেরকে অতীত বিরহ-মিলন স্মরণ করিয়ে দেয়।

 

 উদ্দীপকেও একই বিষয়বস্তুর প্রতিফলন ঘটেছে। এখানে মি. রাজু নকশিকাঁথার প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। যা আমাদেরকে অতীত স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়। কেননা এর প্রতিটি ফোঁড়েই থাকে এক-একটি পারিবারিক জীবনের কাহিনী।

 নকশিকাঁথা আমাদের গ্রামীণ লোকশিল্পের অহংকার। এর প্রতি সুতায় থাকে বিরহ-মিলনের কথা; যা আমাদের অতীত স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে।

 

 

প্রশ্ন -৭ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

 

গ্রীষ্মের ছুটিতে শারিকা মামা বাড়ি বেড়াতে যায়। সেখানে বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি কলস, ফুলদানি, হাঁড়ি, পাতিল ইত্যাদি দেখতে পায়। সে এও দেখতে পায়, গ্রামের মহিলারা জোট বেঁধে এক ধরনের কাঁথা সেলাই করছে। রাতে শোবার সময় মামি তাকে ওই ধরনের একটা কাঁথা দিলেন। পরদিন গ্রামে ঘুরতে বের হলে দেখে, তাঁতিরা কাপড় তৈরি করছে। এসব কিছু তার খুব ভালো লাগে। এগুলোই আমাদের লোকশিল্প। এগুলো টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের।

ক. আমাদের দেশের মেয়েদের একটি সহজাত শিল্পগুণ কী তৈরি করা?

খ. কীভাবে আমরা লোকশিল্প সংরক্ষণ ও স¤প্রসারণ করতে পারি?  

গ. উদ্দীপকে শারিকা যে কাঁথাটি দেখে তাকে কী লোকশিল্প বলা যায়? উদ্দীপক ও আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.উদ্দীপকের শারিকার দেখা তাঁতশিল্প ও পোড়া মাটির কাজের ঐতিহ্য লোকশিল্পে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।  

 

  ৭নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. আমাদের দেশের মেয়েদের একটি সহজাত শিল্পগুণ হলো কাপড়ের পুতুল তৈরি করা।

 খ. আমরা আজ আমাদের অন্তরাত্মা দিয়ে উপলব্ধি করে ব্যক্তি ও সামাজিক পর্যায়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এ শিল্প সংরক্ষণ ও স¤প্রসারণ করতে পারি।

  লোকশিল্পের সাথে জড়িয়ে থাকে একটি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গর্ব। আমাদের লোকশিল্প অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সুপরিকল্পিত উপায়ে এবং সুরুচিপূর্ণ লোকশিল্প প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দিলে লোকশিল্প ক্ষেত্রের সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে। লোকশিল্পের সংরক্ষণ, বিকাশ, ¤প্রসারণ ও তার প্রচারে প্রত্যেকে স্ব স্ব অবস্থানে থেকে হৃদয় দিয়ে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে। আমরা আমাদের লোকশিল্পকে সংরক্ষণ ও স¤প্রসারণ করতে পারি।

 

গ. হ্যাঁ, উদ্দীপকে শারিকা যে কাঁথাটি দেখে তাকে লোকশিল্প বলা যায়।

 

 খাদ্যশস্যের পরেই বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সঙ্গে যে জিনিসটি অতি নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে, তা হলো এখানকার কুটিরশিল্প। এক সময়ে ঘর গৃহস্থালির নিত্য ব্যবহারের প্রায় সব পণ্যই এদেশের গ্রামের কুটিরে তৈরি হতো। আজও অনেক কিছুই হয়। এগুলো কুটির শিল্পের মাধ্যমে তৈরি হলেও শিল্পগুণ বিচারে এ ধরনের সামগ্রী লোকশিল্পের মধ্যে গণ্য।

 

 উদ্দীপকে দেখা যায়, গ্রীষ্মের ছুটিতে শারিকা মামা বাড়ি বেড়াতে যায়। সেখানে বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি কলস, ফুলদানি, হাঁড়ি, পাতিল ইত্যাদি দেখতে পায়। সে এও দেখতে পায়, গ্রামের মহিলারা জোটবেঁধে এক ধরনের কাঁথা সেলাই করছে। রাতে শোবার সময় মামি তাকে ওই ধরনের একটা কাঁথা দিলেন। শারিকার দেখা কাঁথাটি প্রসঙ্গে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে। নকশিকাঁথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ লুপ্ত প্রায় হলেও এর কিছু কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাদের মনের মতো করে কাঁথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পান। উদ্দীপকের শারিকার দেখা কাঁথাটিকে নকশিকাঁথা হিসেবে অভিহিত করা যায়। আর এ ধরনের কুটির শিল্পজাত দ্রব্যসামগ্রী লোকশিল্পের অন্তর্ভুক্ত।

 

ঘ. একটি দেশ ও জাতির গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে উদ্দীপকে শারিকার দেখা তাঁতশিল্প ও পোড়া মাটির কাজের ঐতিহ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

লেখক এ প্রবন্ধে বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। আমাদের নিত্যব্যবহার্য অধিকাংশ জিনিসই এ কুটিরশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। শিল্পগুণ বিচারে এ ধরনের শিল্পকে লোকশিল্পের মধ্যে গণ্য করা হয়।

 

উদ্দীপকে দেখা যায়, গ্রীষ্মের ছুটিতে শারিকা মামা বাড়ি বেড়াতে যায়। সেখানে বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি কলস, ফুলদানি, হাঁড়ি, পাতিল ইত্যাদি দেখতে পায়। সে এও দেখতে পায়, গ্রামের মহিলারা জোটবেঁধে এক ধরনের কাঁথা সেলাই করছে। রাতে শোবার সময় মামি তাকে ওই ধরনের একটা কাঁথা দিলেন। পরদিন গ্রামে ঘুরতে বের হলে দেখে, তাঁতিরা কাপড় তৈরি করছে। এসব কিছু তার খুব ভালো লাগে। এগুলোই আমাদের লোকশিল্প। এগুলো টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের।

 উদ্দীপকে বর্ণিত এসব জিনিসকে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে গ্রামবাংলার কুটিরশিল্পের বর্ণনায় এই শিল্পজাত দ্রব্যগুলোর উল্লেখ আছে। প্রবন্ধে নকশিকাঁথা, মসলিন, জামদানি বর্ণনার সাথে সাথে পোড়ামাটির বিভিন্ন তৈজসপত্রেরও উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের গৌরবজনক ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিশ্বের বুকে প্রচারে প্রসারে একটি ঐতিহ্যবাহী জাতি হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রদানে তাঁতশিল্প ও পোড়ামাটির কাজের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ক্রিয়াশীল।

 

 

প্রশ্ন -৮ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :


আরিফ তার এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে নিয়ে যায় একটি পিতলের কলস। কিন্তু অধিকাংশ অতিথি নিয়ে এসেছেন নানা ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী। আরিফের উপহারটি দেখে অনেকেই মুখ টিপে হাসে। কিন্তু আরিফ এসবের পাত্তা দেয়নি। বরং দুর্লভ প্রায় এই লোকশিল্পটি উপহার দিতে পেরে সে গর্বিত। কেননা সে জানে এর মধ্যেই রয়েছে আমাদের লোক-ঐতিহ্যের যথার্থ পরিচয়।

ক. ঢাকার কোন জিনিসটি মোগল বাদশাহদের বিলাসের বস্তু ছিল?   

খ. কুটিরশিল্প কীভাবে আমাদের জীবনের সাথে জড়িত?

গ. উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের কোন দিকটির পরিচয় বহন করে? ব্যাখ্যা কর।  

ঘ. আরিফের এ মানসিকতা আমাদের লোক-ঐতিহ্য সংরক্ষণে কতটুকু ভ‚মিকা পালন করে? ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪

  

৮নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. ঢাকাই মসলিন তৎকালীন মোগল বাদশাহদের বিলাসের বস্তু ছিল।

খ. দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহারে ভ‚মিকা রাখার মাধ্যমে কুটিরশিল্প আমাদের জীবনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত।

 ঘর-গৃহস্থালির নিত্যব্যবহারের সব পণ্যদ্রব্যই এদেশের গ্রামের কুটিরে এক সময় তৈরি হতো। বর্তমানেও আমাদের দেশে খাদ্যশস্যের পরেই কুটিরশিল্পের অবস্থান। কুটিরশিল্প তাই আমাদের জীবনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে।

 

গ. উদ্দীপকটি ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বর্ণিত দুর্লভ লোকশিল্পের ঐতিহ্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছে।

 

 বাংলাদেশের লোকশিল্প সেই সুপ্রাচীনকাল থেকে সমৃদ্ধ। এদেশের মানুষ প্রয়োজনে ও শখের বশে নানা হস্তজাত পণ্য তৈরি করে আসছে, যার অন্যতম হচ্ছে কাঁসা ও পিতলের তৈরি তৈজসপত্র। বর্তমানে এসব জিনিসের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসছে। উদ্দীপকে এ বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে। কাঁসা ও পিতলের জিনিসের মূল্যায়ন ও জনপ্রিয়তা দিন দিন কমে আসছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষ এখন মেলামাইন কিংবা প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার করছে। কিন্তু উদ্দীপকে আরিফ বিয়ের উপহার হিসেবে পিতলের কলস এনে আমাদের লোকশিল্পের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে তার এ উদ্যোগ আমাদের বিলুপ্ত প্রায় লোকশিল্পকে আমাদের সামনে তাৎপর্যপূর্ণভাবে উপস্থাপন করেছে।

 

ঘ. উদ্দীপকের আরিফের মানসিকতা আমাদের লোকঐতিহ্য সংরক্ষণে কার্যকর ভ‚মিকা পালন করে।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক লোকশিল্পের নানা দিকের পরিচয় তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি এই লোকশিল্পের সংরক্ষণ ও প্রসারের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন, যা উদ্দীপকের আরিফের মানসিকতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

 

 লোকশিল্প আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য ও প্রাণের সম্পদ। লোকশিল্পের বর্তমান অবস্থা বেশ নাজুক ও সময়ের পরিবর্তনে এটি লুপ্তপ্রায়। যেমন পিতলের তৈজসপত্র এখন গৃহস্থালি কাজে তেমন একটা ব্যবহৃত হয় না। কিন্তু বিশ্বের দরবারে আমাদের ঐতিহ্যের পরিচিতি হতে পারে এসব লোকশিল্প।

 লোক ঐতিহ্যকে রক্ষা এবং প্রসারে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করা প্রয়োজন। উদ্দীপকের আরিফ সবার উপহাসকে উপেক্ষা করেও পিতলের কলস উপহার দিয়ে লোকশিল্পের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছে। লোকঐতিহ্য সংরক্ষণে এমন উদ্যোগের কথাই বলা হয়েছে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে। সুতরাং বলা যায়, তার এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আমাদের লোকশিল্প সংরক্ষণে কার্যকর ভ‚মিকা রাখবে।

 

 

 

প্রশ্ন -৯ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :


রূপাতলী গ্রামের শিউলী বেগম বর্ষাকালে একটি লোকশিল্প তৈরি করে। বর্ষার সময় চারদিকে পানি থই থই করে। ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া যায় না। তাই বর্ষাই এ শিল্প তৈরির উপযুক্ত সময়। শিউলী বেগম সংসারের কাজ সাঙ্গ করে দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর পাটি বিছিয়ে পানের বাটা পাশে নিয়ে এ শিল্প তৈরি করতে বসে।

ক. সিলেটের কোন শিল্পটি সকলের কাছে পরিচিত?  

খ. খাদি কাপড় কীভাবে তৈরি হয়?  

গ. শিউলী বেগম বর্ষাকালে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে উল্লিখিত কোন শিল্পটি তৈরি করে? ব্যাখ্যা কর।   

ঘ. “শিউলী বেগমের তৈরিকৃত শিল্প সম্পর্কিত আলোচনাই ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের একমাত্র বিষয় নয়”- মন্তব্যটি বিচার কর। ৪

 

 ৯নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত।

 

খ. বাড়ির পাশের তুলা গাছ থেকে সংগ্রহ করা তুলা থেকে তৈরি সুতা কেটে তৈরি করা হয় খাদি কাপড়।

 খাদি কাপড়ের অন্যতম বিশেষত্ব হচ্ছে এর সবটাই হাতে প্রস্তুত করা হয়। অবসর সময় তুলা থেকে সুতা কেটে হস্তচালিত তাঁতে খাদি কাপড় প্রস্তুত করা হয়। খাদি কাপড় স্বদেশি আন্দোলনের সময় দেশি কাপড় ব্যবহারের আদর্শে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

 

গ. শিউলী বেগম বর্ষাকালে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে উল্লিখিত ‘নকশিকাঁথা’ শিল্পটি তৈরি করে।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে এক সময় বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে নকশিকাঁথা তৈরির রেওয়াজ ছিল। এক একটি সাধারণ আকারের নকশিকাঁথা সেলাই করতে কমপক্ষে ছয় মাস সময় লাগত। বর্ষাকালে যখন পানি থই থই করে ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া যায় না। এমন মৌসুমই নকশিকাঁথা তৈরির উপযুক্ত সময়। মেয়েরা সংসারের কাজ সাঙ্গ করে দুপুরের পাটি দিয়ে নকশিকাঁথা সেলাই করত। উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পটিও বর্ষার সময় তৈরি করা হয়। শিউলী সংসারের কাজ সাঙ্গ করে দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর পাটি বিছিয়ে পানের বাটা পাশে নিয়ে এ শিল্প তৈরি করতে বসে। এ বিষয়গুলো ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে নকশিকাঁথা তৈরির দিকটিই ইঙ্গিত করে।

 

ঘ. “শিউলী বেগমের তৈরিকৃত শিল্প অর্থাৎ নকশিকাঁথা সম্পর্কিত আলোচনাই ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের একমাত্র বিষয় নয়”- মন্তব্যটি যথার্থ।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোকঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। এতে বাংলাদেশের লোকশিল্পের অন্তর্গত প্রায় প্রতিটি বিষয় সম্পর্কেই আলোচনা করা হয়েছে। এখানে ঢাকাই মসলিন, ঢাকাই জামদানি, নকশিকাঁথা, পোড়ামাটি দিয়ে তৈরি নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য, নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি, আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট, খুলনার মাদুর, সিলেটের শীতলপাটি ইত্যাদি শিল্প সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া লোকশিল্পের গুরুত্ব ও এ শিল্প সংরক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে আলোচ্য প্রবন্ধে।

 

 অপরপক্ষে, উদ্দীপকে শিউলী বেগম বর্ষাকালে একটি শিল্প তৈরি করে। সংসারের সব কাজ সাঙ্গ করে পাটি বিছিয়ে পানের বাটা পাশে নিয়ে সে যে শিল্পটি তৈরি করে সেটি আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধে উল্লিখিত শুধু নকশিকাঁথাকেই ইঙ্গিত করে। এ বিষয়টি ছাড়াও আলোচ্য প্রবন্ধের বিষয় আরও স¤প্রসারিত। যা উদ্দীপকে আলোচিত হয়নি।

 সুতরাং বলা যায়, প্রশ্নোল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।

 

প্রশ্ন -১০ নিচের চিত্রকল্পটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :





ক. নারায়ণগঞ্জের কোন গ্রামে জামদানি কারিগরদের বসবাস?  

খ. নকশিকাঁথা কীভাবে তৈরি করা হয়? 

গ. চিত্রে প্রদর্শিত শৈল্পিক নিদর্শনগুলোর পরিচয় তোমার পাঠ্য কোন প্রবন্ধে পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।  

ঘ. উক্ত প্রবন্ধের আলোকে চিত্রে প্রদর্শিত শিল্পগুলো তৈরিতে নারীর অবদান মূল্যায়ন কর।  

 

 ১০নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. নারায়ণগঞ্জের নওয়াপাড়া গ্রামে জামদানি কারিগরদের বসবাস।

 

খ. বর্ষাকালে সংসারের মেয়েদের তেমন কাজ থাকে না এই অবসরে গ্রামের মেয়েরা নকশিকাঁথা তৈরি করে।

 বর্ষাকালে চারিদিক পানিতে থই থই বলে ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। এ সময় গ্রামের মেয়েরা সংসারের কাজ শেষ করে দুপুরের খাওয়া সেরে পানের বাটা পাশে নিয়ে আয়েশ করে পা মেলে বসে নকশিকাঁথা সেলাই করতে বসে। নকশা এঁকে এই কাঁথায় জীবন ও প্রকৃতির ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়।

 

গ. চিত্রে প্রদর্শিত শৈল্পিক নিদর্শনগুলোর পরিচয় আমার পাঠ্য ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে পাওয়া যায়।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। এখানে লেখক বলেছেন, নকশিকাঁথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ লুপ্তপ্রায় হলেও এর কিছু কিছু নমুনা এখনো পাওয়া যায়। আবার ছোটখাটো সামান্য হাতিয়ারের সাহায্যে আমাদের কারিগররা বাঁশ দিয়ে আজকাল আধুনিক রুচির নানা ব্যবহারিক সামগ্রী তৈরি করছে। এগুলো শুধু আমাদের দেশেই নয় বিদেশেও বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

 চিত্রে শিল্পের এ নিদর্শনগুলোই প্রদর্শিত হয়েছে। এখানে দেখা যায়, বাঁশ ও বেতের তৈরি চেয়ার, মাদুর, কুলা ইত্যাদি। এছাড়া আলোচ্য প্রবন্ধে উল্লিখিত গ্রামীণ শিল্পের অন্যতম নিদর্শন নকশিকাঁথাও এখানে প্রদর্শিত হয়েছে।

 

ঘ. চিত্রে প্রদর্শিত শৈল্পিক নিদর্শনগুলো তৈরিতে নারীর অবদান অপরিসীম।

 

 আমাদের দেশে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প তৈরি ও বিকাশে নারীর ভ‚মিকাই অনেকাংশে মুখ্য কেননা, অবসর সময় কাটানোর জন্যই আমাদের দেশে লোকশিল্পের চর্চা হয়। তাই সেখানে নারীদের অবদানই থাকে অনেকাংশে।

 

 চিত্রে বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের সাথে জড়িত কিছু শৈল্পিক নিদর্শন প্রদর্শন করা হয়েছে। এগুলো হলো বাঁশ ও বেতের তৈরি কুলা, চেয়ার, মাদুর, নকশিকাঁথা ইত্যাদি। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। এই লোকশিল্পের অন্যতম কিছু উপাদানেরই ইঙ্গিত রয়েছে চিত্রে।

 

 আলোচ্য প্রবন্ধে বলা হয়েছে, নকশিকাঁথা লুপ্তপ্রায় হলেও কিছু কিছু নমুনা এখনও পাওয়া যায়। গ্রামীণ নারীরা শিল্প তথা বাঁশ, বেত, দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ব্যবহারিক দ্রব্য বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করেছে। নকশিকাঁথা সেলাইয়ের উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। এ সময় চারদিকে পানি থই থই করে। মেয়েরা তখন ঘর থেকে বাইরে বের হতে না পেরে নকশিকাঁথাসহ অন্যান্য দ্রব্য তৈরিতে মনোনিবেশ করে। তারা সংসারের কাজ সমাপ্ত করে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সেরে পাটি বিছিয়ে পানের বাটা পাশে নিয়ে এসব শিল্প তৈরি করতে বসে। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা এসব শিল্প তৈরির অনুপ্রেরণা পায়।

 আলোচ্য প্রবন্ধে নকশিকাঁথা তৈরিতে নারীর ভ‚মিকা বর্ণনার মাধ্যমে এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়।

 

 

প্রশ্ন -১১ নিচের চিত্রকল্পটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

 


ক. খাদ্যশস্যের পরেই বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সঙ্গে কোন জিনিসটি জড়িত?

খ. বর্ষাকালে নকশিকাঁথা তৈরির উপযুক্ত সময় কেন?  

গ. চিত্রে প্রদর্শিত জিনিসগুলো ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের কোন শিল্পের নিদর্শন? ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ. উক্ত শিল্পের মধ্যে এদেশের মানুষের শৌখিন শিল্পীমনের পরিচয় নিহিত উদ্দীপক ও ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। 

 

 ১১নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. খাদ্যশস্যের পরেই বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সঙ্গে অতি নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে, কুটিরশিল্প।

 

খ. বর্ষাকালে অবিরাম ধারায় বৃষ্টি ঝরার কারণে বাইরে যাওয়া যায় না বলে এ সময় ঘরে বসে নকশিকাঁথা তৈরির উপযুক্ত সময়।

                বাংলার গ্রামীণ পরিবেশে চারিদিক বর্ষার পানিতে ভরে যায়। পানির কারণে বইরে যাওয়া যায় না। এ সময় গ্রামের মেয়েরা ঘরের কাজ শেষ করে দুপুরের খাওয়ার পর সবাই মিলে নকশিকাঁথা সেলাই করতে বসে। সুযোগ পেলে পাড়াপ্রতিবেশীরাও যোগ দেয় তাদের সঙ্গে। এভাবেই বর্ষাকালে ঘরে ঘরে শুরু হয় নকশিকাঁথা তৈরির উৎসব।

 

গ. চিত্রে প্রদর্শিত জিনিসগুলো ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বর্ণিত মৃৎশিল্পের নিদর্শন।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক লোকশিল্পের বর্তমান অবস্থা, ঐতিহ্যসহ নানা উপকরণের বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে মাটির তৈরি কিছু উপকরণ অর্থাৎ মৃৎশিল্পের কথাও বর্ণিত হয়েছে। এ শিল্পের মধ্যে রয়েছে মাটির কলস, হাঁড়ি, পাতিল, সানকি, ফুলদানি, দইয়ের ভাঁড়, রসের ভাঁড়, ঠিলা, সন্দেশ ও পিঠার ছাঁচ, টেপা পুতুল, হাতি, ঘোড়া, হিন্দু স¤প্রদায়ের দুর্গা, সরস্বতী, ²ী ইত্যাদি। চিত্রে মাটি দিয়ে তৈরি অপরূপ কারুকার্যখচিত এমনই দুটি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়েছে।

 

 এগুলো হলো কলসি কাঁখে বাংলার গ্রামীণ নারীর চিরকালীন রূপ, টেপা পুতুল ও হাতি। এগুলো মাটি দিয়ে তৈরি অর্থাৎ ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বর্ণিত মৃৎশিল্পের নিদর্শন।

 

ঘ. ‘মৃৎশিল্পের মধ্যে এদেশের ‘মানুষের শৌখিন’ শিল্পীমনের পরিচয় নিহিত’ মন্তব্যটি যথার্থ।

 

 মৃৎশিল্প তথা পোড়ামাটির কাজের ঐতিহ্য এদেশে বহু যুগের। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় এদেশের পাল বা কুমোড়পাড়ার অধিবাসীরা পুতুল, হাঁড়ি, কলস, পিঠার ছাঁচ, দুর্গা, সরস্বতী, ²ী ইত্যাদি গড়বার কাজে সারা বছর ব্যস্ত থাকে। আধুুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট, কৌটা, বাক্স বা ঘর সাজানোর নানা ধরনের শৌখিন সামগ্রী তারা মাটি দিয়ে তৈরি করে। এছাড়া পুরাকালে মসজিদ বা মন্দিরের গায়ে যেসব নকশাদার ইট দেখা যায় তা এ দেশের লোকশিল্পের এক অতুলনীয় নিদর্শন। প্রতীকধর্মী মাটির টেপা পুতুলগুলোর মধ্যে শত শত বছর পূর্বের পাল বা কুমোরদের যে কারিগরি বিদ্যা এবং শিল্পীমনের পরিচয় পাওয়া যায় তা অভাবনীয়।

 

 চিত্রে মৃৎশিল্পের অসাধারণ দুটি নিদর্শন প্রদর্শিত হয়েছে। প্রতীকধর্মী পুতুলটির মধ্য দিয়ে বাংলার নারীর চিরকালীন রূপ ফুটে উঠেছে। হাতি ও পুতুলটির গায়ে অসাধারণ শিল্পকর্ম যেকোনো মানুষকে আকৃষ্ট করবে। শৌখিন শিল্পীমনের অধিকারী না হলে এ ধরনের সৃষ্টিকর্ম তৈরি করা সম্ভব নয়।

 সুতরাং বলা যায়, মৃৎশিল্পের মধ্যে এদেশের মানুষের শৌখিন শিল্পীমনের পরিচয় নিহিত। যা উদ্দীপক ও আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধে সন্নিবেশিত হয়েছে।

 

প্রশ্ন -১২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

 

দিনাজপুরের কান্তজির মন্দির দর্শনে অভিভ‚ত হলো রিপন ও তার সহপাঠীরা, গোটা মন্দির তৈরি হয়েছে পোড়ামাটির নকশা করা ফলক দিয়ে। রিপন এই টেরাকোটার ব্যবহার দেখেছিল বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদের গায়েও। রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘরে গিয়ে দেখল মাটির প্রাচীন তৈজসপত্র, বাটখারা ও সাজসজ্জার উপকরণ, রাজশাহীর নকশিকাঁথাও তার মনোযোগ কাড়ল। সে মনে মনে ভাবল আমাদের লোকশিল্পের সম্ভার অতুলনীয়। এগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা সবার দায়িত্ব।

ক. মৃৎশিল্প কী?    

খ. জামদানি তৈরিতে শীতলক্ষ্যা নদীর ভ‚মিকা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

গ. উদ্দীপকে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে তা বিশ্লেষণ কর। ৩

ঘ. ‘উদ্দীপকে লোকশিল্প সংরক্ষণে রিপন যা ভেবেছে তা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ উক্তিটির তাৎপর্য পঠিত প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন কর।   

 

 ১২নং প্রশ্নের উত্তর  

 

ক. মৃৎশিল্প বলতে মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বোঝায়।

 

খ. ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া এবং পরিস্থিতির জন্যই জামদানি তৈরিতে শীতলক্ষ্যা নদীর ভ‚মিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁতশিল্পের অন্তর্গত জামদানি শাড়ি তৈরির শিল্পকর্মটি বিস্তার লাভ করেছে শীতলক্ষ্যা নদীর এলাকায়। শীতলক্ষ্যা নদীর পানির বাষ্প থেকে যে আর্দ্রতার সৃষ্টি হয় তা জামদানি বোনার জন্য শুধু উপযোগীই নয়, বরং এক অপরিহার্য বস্তু বলা চলে।

 

গ. উদ্দীপকে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বর্ণিত লোকশিল্পের গুরুত্বের দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লোকশিল্পের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে।

 

 আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে যেমন লেখকের উদ্দেশ্য ছিল বিলুপ্তপ্রায় লোকশিল্পের স্বরূপ উন্মোচনের পাশাপাশি এর সংরক্ষণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা তেমনি উদ্দীপকেও একই বিষয়টি উঠে এসেছে। আমাদের দেশের বিভিন্ন লোকশিল্পের মধ্যে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, লোকগাথা, মানুষের সুখ-দুঃখের স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন ধরনের লোকশিল্পের মধ্যে কুটিরশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, নকশিকাঁথা প্রধান।

 

 উদ্দীপকেও ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে আলোচিত মৃৎশিল্প, টেরাকোটা, নকশিকাঁথার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। উদ্দীপকের রিপন ও তার সহপাঠীরা দিনাজপুরের কান্তজির মন্দির ভ্রমণে গিয়ে পোড়া মাটির নকশার কাজ দেখতে পায়। মন্দিরের গায়েও ষাটগম্বুজ মসজিদের মতো টেরাকোটার নকশা দেখতে পায়। রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘরে প্রাচীন মাটির তৈরি তৈজসপত্র, নকশিকাঁথাও নজরে পড়ে। উদ্দীপকে এবং ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে বিলুপ্তপ্রায় লোকশিল্পকে রক্ষা করার বিষয়টিই প্রাধান্য পেয়েছে।

 

ঘ. ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক বাংলাদেশের লোকশিল্প সংরক্ষণে যে মতামত দিয়েছেন তার আলোকে বলা যায়, উদ্দীপকের রিপন লোকশিল্প সংরক্ষণে যা ভেবেছে তা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

 

 যেকোনো দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে সে দেশের শিল্পকর্ম। তাই যেকোনো শিল্পকর্মের যথাযথ সংরক্ষণ ও স¤প্রসারণের ব্যবস্থা করা উচিত। উদ্দীপকে রিপন ও তার সহপাঠীরা দিনাজপুরের কান্তজির মন্দির দর্শনে অভিভ‚ত হয় পোড়ামাটির ও টেরাকোটার কাজ দেখে।

 

 রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘরে মাটির তৈরি তৈজসপত্র, সাজসজ্জার উপকরণ, নকশিকাঁথা দেখে রিপনের মনে হয়েছে আমাদের বিলুপ্তপ্রায় লোকশিল্পের সম্ভার টিকিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে লেখক লোকশিল্পের বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার পর মূল বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। বিলুপ্তপ্রায় লোকশিল্পের বিভিন্ন ধরন টিকিয়ে রাখতে আমাদের দেশের প্রত্যেক সচেতন নাগরিকের যেমন দায়িত্ব, তেমনি সরকারেরও শক্ত ভ‚মিকা খুব বেশি জরুরি।

 

 উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উক্ত প্রবন্ধের লেখক এবং উদ্দীপকের রিপনের ভাবনা আমাদের লোকশিল্পকে টিকিয়ে রাখা, যা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

 

 

প্রশ্ন-১৩: 

আসমা ফুলপুর গ্রামে বাস করে। সে ঘরে বসে নকশিকাঁথা তৈরি করে। প্রায় সারাবছর এ কাজ করে ঐসব কাঁথা বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে যে টাকা আয় করে তা দিয়েই আসমা তার সংসার চালায়। তাছাড়া আসমার প্রতিবেশী মরিয়ম খাদি কাপড় তৈরি করে। সে ঘরে খাদি কাপড়ের জামাকাপড় তৈরি করে শহরে বিক্রি করে সংসার চালায়। এভাবে তাদের সংসার সুখে-শান্তিতেই রয়েছে।

ক. মসলিন কাদের বিলাসের বস্তু ছিল?     

খ. ‘শুধু কারিগরি দক্ষতায় নয়, এ ধরনের কাপড় বুনবার জন্য শিল্পীমন থাকাও প্রয়োজন।’ কথাটি ব্যাখ্যা কর।  

গ. উদ্দীপকটিতে ‘আমাদের লোকশিল্প’ রচনার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে?- বর্ণনা কর।    

ঘ. “উদ্দীপকটিতে ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধের আংশিক বিষয়বস্তু ফুটে উঠেছে”- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর। 

 

 

প্রশ্ন-১৪: 

সোনারগাঁয়ে অবস্থিত লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে প্রতি বছর এক মাসব্যাপী লোকজ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেই মেলায় হাতের তৈরি শিকা, হাতপাখা, মাটির পুতুলসহ নানান সামগ্রী পাওয়া যায়। এ ছাড়া ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ি পাওয়া যায়। অবহেলা আর অনাদরে এই জামদানি শাড়িসহ অন্যান্য লোকশিল্প বিলুপ্ত হতে চলছে। আমরা যদি এখনি সচেতন না হই তাহলে আমাদের এই ঐতিহ্যকে আমরা টিকিয়ে রাখতে পারব না। আমাদের এই শিল্প সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সকলের।

ক. ‘রেওয়াজ’ শব্দের অর্থ কী?    

খ. বর্ষাকালে নকশিকাঁথা তৈরির উপযুক্ত সময় কেন?          

গ. উদ্দীপকটিতে ‘আমাদের লোকশিল্প’ রচনার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? বর্ণনা কর।    

ঘ.উদ্দীপক ও ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধ উভয়েরই উদ্দেশ্য লোকশিল্পের গুরুত্ব বুঝে সেগুলো সংরক্ষণ করা।-মূল্যায়ন কর।    


নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Telegram Group Join Now
Our Facebook Page Join Now
Class 8 Facebook Study Group Join Now
Class 7 Facebook Study Group Join Now
Class 6 Facebook Study Group Join Now

Post a Comment