মংডুর পথে - অষ্টম শ্রেণি - সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)

মংডুর পথে - অষ্টম শ্রেণি - সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF) | Mangrur Pothe : Creative Questions and Answers - Class 8
Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

মংডুর পথে - অষ্টম শ্রেণি - সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF) | Mangrur Pothe : Creative Questions and Answers - Class VIII



মংডুর পথে

প্রশ্ন -১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

১. নারকেল শ্রীলংকানদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। নারকেলতেল ছাড়া তারা কোনো খাবার রান্না করে না। কারিতে নারকেল তেল ছাড়াও গুঁড়া শুঁটকি মাছ ব্যবহার করা হয়। এই গুঁড়া শুঁটকিকে তারা মসলার অংশ হিসেবে দেখে। এরা রান্নায় প্রচুর মসলা এবং লাল মরিচ ব্যবহার করে।


২. শ্রীলংকার রাস্তায় যেসব তরুণীরা চলাচল করেন তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ অতি সাধারণ। দামি পোশাক ও সাজগোজের দিকে তাদের যথেষ্ট আগ্রহ আছে বলে মনে হয় না। স্পষ্টতই মনে হয়, এরা জীবনযাপনে সহজ-সুন্দর এবং এতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

ক. সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতো বস্ত্রটির নাম কী? 

খ. ‘ব্যান্ডেল রোড তাদের স্মৃতি বহন করছে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 

গ. উদ্দীপক-১ এ ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর যে দিকটি প্রকাশ পেয়েছে তার বর্ণনা দাও। 

ঘ.উদ্দীপক-১ এবং উদ্দীপক-২ মিলে মিয়ানমারবাসীর জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির পুরো দিকটিই প্রকাশ পেয়েছে- ‘মংডুর পথে’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।


  ১নং প্রশ্নের উত্তর  


ক. সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতো বস্ত্রটির নাম চীবর।


খ. ‘ব্যান্ডেল রোড তাদের স্মৃতি বহন করেছে’- বলতে বোঝানো হয়েছে- ব্যান্ডেল রোড পর্তুগিজদের স্মৃতি বহন করছে।

 ব্রিটিশ যুগ শুরু হওয়ারও প্রায় একশ বছর আগে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে এসে বসতি স্থাপন করে। তারা নিজেদের বসতির জায়গাকে ব্যান্ডেল বলত। সেই সূত্র ধরে চট্টগ্রামে এখনো ব্যান্ডেল রোড তাদের স্মৃতি বহন করছে। এতে প্রমাণিত হয় যে সেখানে পর্তুগিজরা ছিল।


গ. উদ্দীপক-১ এ ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর অন্যতম বিষয় মিয়ানমারের খাদ্যাভ্যাসের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।

     ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীতে দেখা যায়, মিয়ানমারের লোকজন পোড়া লঙ্কা কচলে লবণ ও তেল দিয়ে ভর্তা করে। এর সঙ্গে তারা লেবুর কচি পাতা দেয়। এছাড়া ওখানকার চাকমা মারমারা ধানি লঙ্কা পুড়িয়ে লবণ ও পিঁয়াজ দিয়ে ভর্তা করে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নারকেল গাছের সারি দেখে বোঝা যায় যে এরা নারকেলপ্রিয়। মিয়ানমারের লোকজন নুডলস, পোড়া লঙ্কা গুঁড়ো, তেঁতুলের টক, কলার থোড় ইত্যাদি দিয়ে স্যুপ তৈরি করে খায়। এতে তাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসের পরিচয় পাওয়া যায়।

     উদ্দীপকে শ্রীলংকার অধিবাসীদের খাবারদাবারের বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে। নারকেল শ্রীলংকানদের প্রিয় খাবার। প্রায় সবরকম খাবার তারা নারকেল তেলের মিশ্রণে তৈরি করে। এছাড়া শুঁটকি মাছের গুঁড়ো তারা মসলার মতো ব্যবহার করে। রান্নায় এরা প্রচুর গরম মশলা এবং লাল মরিচ ব্যবহার করে। শ্রীলংকানদের সম্পর্কিত এ বক্তব্যে তাদের খাদ্যাভ্যাসের পরিচয় পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, উদ্দীপক ও ভ্রমণকাহিনীতে বর্ণিত মিয়ানমারের বাসিন্দাদের খাদ্যাভ্যাসের দারুণ মিলের পরিচয় পাওয়া যায়।


ঘ. উদ্দীপক-১ এবং উদ্দীপক-২ মিলে মিয়ানমারবাসীর জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির পুরো দিকটিই প্রকাশ পেয়েছে- মন্তব্যটি যথার্থ।

     ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীতে লেখক মিয়ানমারবাসীর সমগ্র জীবনচিত্র, খাদ্যাভ্যাস, চালচলন, পোশাক-পরিচ্ছদ এমনকি উক্ত দেশের গোটা সংস্কৃতিকেই উপস্থাপন করেছেন। মিয়ানমারবাসীর খাদ্যাভ্যাসে রয়েছে বৈচিত্র্য। এছাড়া সেখানে বার্মিজ মেয়েরা বেশ সুশ্রী। তারা সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতো থামি পরে। বক্ষবন্ধনে তারা ঝলমলে ব্লাউজ জাতীয় জামা বা গেঞ্জি পরিধান করে। এছাড়া সাজগোজের জন্য তারা চুলে ফুল গোঁজে, চিরুনি ও রিবন ফিতে ব্যবহার করে।

     উদ্দীপক-১ এবং উদ্দীপক-২-এ শ্রীলংকানদের সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটেছে। উদ্দীপক-১-এ দেখা যায় তাদের খাদ্যাভ্যাস রীতির প্রকাশ। নারকেল খুব পছন্দ শ্রীলংকানদের। প্রায় সব রান্নায় তারা নারকেল তেল ব্যবহার করে। এছাড়া তারা শুঁটকির গুঁড়া মসলার মতো ব্যবহার করে। রান্নায় তারা গরম মসলা ও লাল মরিচ অধিক পরিমাণে ব্যবহার করে। উদ্দীপক-২-এ তাদের পোশাক-পরিচ্ছদের পরিচয় পাওয়া যায়। শ্রীলংকার রাস্তাঘাটে যেসব তরুণী চলাচল করে তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ অতি সাধারণ। সাজগোজের দিকে তাদের তেমন আকর্ষণ নেই। এতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

     উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, উদ্দীপক-১ এবং উদ্দীপক-২-এ শ্রীলংকার খাদ্যাভ্যাস ও পোশাক-পরিচ্ছদ সম্পর্কিত সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটেছে যা ‘মংড়ুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীতে বর্ণিত মিয়ানমারবাসীর খাদ্যাভ্যাস ও পোশাক-পরিচ্ছদরীতি প্রকাশের সঙ্গে সম্পর্কিত।


প্রশ্ন -২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

জাবিদ পেশায় প্রকৌশলী। দাপ্তরিক কাজে তিনি জাপান যান। সেখানকার পরিকল্পিত রাস্তাঘাট দেখে, অত্যাধুনিক আরামদায়ক গাড়িতে চড়ে তিনি অভিভূত হন। সেখানে একটি বিলাসবহুল সুসজ্জিত হোটেলে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়। হোটেলে ব্যায়ামগার, সুইমিংপুল, বলরুমসহ যাবতীয় সুবিধাদি পেয়ে তিনি মুগ্ধ হয়।

ক. আরাকান রাজ্যের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন রাজধানীর নাম কী? ১

খ. ‘মংডুর মহিলারা চির স্বাধীন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২

গ. উদ্দীপকের হোটেলে জাবিদের অবস্থা এবং ‘মংডুর পথে’ রচনায় লেখকের অবস্থার তুলনামূলক আলোচনা কর। ৩

ঘ. উদ্দীপকটি ‘মংডুর পথে’ রচনার সমগ্র ভাব প্রকাশ করেনি। মূল্যায়ন কর। ৪


  ২নং প্রশ্নের উত্তর 

 

ক. আরাকান রাজ্যের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন রাজধানীর নাম ম্রাউক-উ।


খ. মংডুর মহিলারা চির স্বাধীন বলতে তাদের ইচ্ছেমতো পেশা বেছে নেওয়া এবং চলাফেরার স্বাধীনতাকে বেঝানো হয়েছে। 

     মংডুর পুরুষদের মতো নারীরাও সব কাজ করছে, ব্যবসায় করছে অর্থাৎ তারা চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ নয়। মংডুর নারীরা ঘরে বন্দি হয়ে থাকে না। দোকানও করে নারীরা। তাদের চলাফেরায় কোনো বাধা নেই। সমাজে এ নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। নারীদের অবাধ স্বাধীনতা বোঝাতে লেখক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।


গ. উদ্দীপকের হোটেলে জাবিদের অবস্থা এবং ‘মংডুর পথে’ রচনার লেখকের অবস্থার মধ্যে বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।

     ‘মংডুর পথে’ রচনার লেখক মায়ানমারে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। যেখানে তিনি একটি চতুর্থ শ্রেণির হোটেলে ওঠেন। হোটেলটির অবস্থা একেবারেই শোচনীয়। মেঝে এবং দেয়াল দুটোই কাঠের। এছাড়া রাত নটার পর বিদ্যুৎ থাকে না। তাই রাতে ফ্যান বা লাইট কোনোটাই জ্বালানোর উপায় নেই।

     উদ্দীপকে জাবিদ দাপ্তরিক কাজে জাপান যায়। সেখানে তিনি একটি বিলাসবহুল হোটেলে ওঠেন। হোটেলে আরাম-আয়েশের সব ব্যবস্থা রয়েছে, যা তাকে মুগ্ধ করে। এ বিষয়গুলোতেই উদ্দীপকের হোটেলে জাবিদের অবস্থা এবং ‘মংডুর পথে’ রচনার লেখকের অবস্থার মধ্যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে।


ঘ. উদ্দীপকটি ‘মংডুর পথে’ রচনার সমগ্রভাব প্রকাশ করেনি- মন্তব্যটি যথার্থ।

     ‘মংডুর পথে’ রচনাটি একটি ভ্রমণকাহিনী। এ রচনায় লেখক তার মিয়ানমার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। এখানে প্রথমেই মিয়ানমারের প্রতি লেখকের মুগ্ধতা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি মায়ানমারে গিয়ে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। জানতে পেরেছেন, মিয়ানমারের স্থানীয় মানুষ ও তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে। যা তাকে মুগ্ধ করেছে। এছাড়া মায়ানমারের নারীদের স্বাধীনতার বিষয়টিও আলোচিত হয়েছে এখানে।

     উদ্দীপকে জাবিদ একজন প্রকৌশলী। তিনি দাপ্তরিক কাজে জাপান যান। সেখানকার পরিবেশ তাকে মুগ্ধ করে। এছাড়া বিলাসবহুল হোটেলের কথাও বর্ণিত হয়েছে। যেখানে আধুনিক জীবনের সমস্ত সুবিধা রয়েছে।

     উদ্দীপকে শুধু জাপানের পরিকল্পিত ও অত্যাধুনিক জীবনব্যবস্থার বর্ণনা পাওয়া যায়। কিন্তু রচনায় মিয়ানমারের মানুষের সমগ্র জীবনব্যবস্থার বর্ণনা পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ হয়েছে।


প্রশ্ন -৩ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

পরীক্ষা শেষে মাওসুল তার বাবা-মা’র সাথে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছে। সে শুনেছে সমুদ্র সৈকতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোকজন বেড়াতে আসে নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করতে, বিশেষ করে সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য সেখানে অনেক মানুষের ভিড় হয়। আজ বাস্তবে সৈকতে এসে সে দেখতে পেল রাবার বাগান, ডুলাহাজারীর সাফারি পার্ক, বৌদ্ধমন্দির, রাখাইনদের বার্মিজ মার্কেট, বাজার ঘাটায় প্রচুর গলদা চিংড়ি।

ক. ‘মংডুর পথে’ গল্পের লেখকের নাম কী?  ১

খ. ‘ব্যান্ডেল’ বলতে কী বুঝ?  ২

গ. উদ্দীপকে মাওসুলের ভ্রমণকাহিনীর সাথে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর যে দিক প্রকাশ পেয়েছে- তা তোমার নিজের ভাষায় লিখ।  ৩

ঘ. ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীতে লেখকের অনুভূতির সঙ্গে উদ্দীপকের অনুভূতি এক নয়- প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪


  ৩নং প্রশ্নের উত্তর  


ক. ‘মংডুর পথে’ গল্পের লেখকের নাম বিপ্রদাশ বড়–য়া।


খ. ‘ব্যান্ডেল’ বলতে পর্তুগিজদের বসতির স্থানকে বোঝায়।

 পর্তুগিজরা সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে চট্টগ্রামে এসেছিল। তারা চট্টগ্রামে বসতি স্থাপন করেছিল। এ বসতি স্থানকে তারা ব্যান্ডেল বলত। চট্টগ্রামের ব্যান্ডেল রোড এখন তাদের স্মৃতিই বহন করে।


গ. উদ্দীপকের মাওসুলের ভ্রমণকাহিনীর সাথে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির ভ্রমণের মাধ্যমে বিচিত্র অভিজ্ঞতার অর্জনের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।

     ‘মংডুর পথে’ একটি ভ্রমণকাহিনী। ভ্রমণ মানুষকে বিচিত্র অভিজ্ঞতা দেয়। অজানাকে জানতে, অচেনাকে চিনতে সাহায্য করে। যা আলোচ্য রচনাতেও আমরা প্রত্যক্ষ করি। লেখক আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদ, খাদ্যাভাস, ব্যবসা-বাণিজ্য ধর্ম সংস্কৃতি প্রভৃতি বিষয়ে তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। 

     উদ্দীপকে মাওসুল ভ্রমণ করতে গিয়েছে কক্সবাজারে। আগে সে লোকমুখে কক্সবাজার সম্বন্ধে সামান্য শুনেছে। কিন্তু কক্সবাজারে যখন গিয়েছে, তখনই বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে। নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছে। যা তার অভিজ্ঞতার ঝুলিকে করেছে সমৃদ্ধ। তাই বলা যায়, প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপক ও ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর বিষয়বস্তু একই।


ঘ. ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীতে লেখকের অনুভূতি ছিল অচেনা আবেগে উপচে পড়ার মতো, যা উদ্দীপকের অনুভূতির সঙ্গে এক নয়।

     ‘মংডুর পথে’ রচনাটি লেখকের মিয়ানমার ভ্রমণের ওপর ভিত্তি করে রচিত। মিয়ানমারে লেখক গিয়েছিলেন মূলত ভ্রমণে। কিন্তু ভ্রমণের শুরুতেই মুগ্ধতা প্রকাশের দিক থেকে লেখকের অচেনা আবেগ যেন উপচে পড়ল। তিনি বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন বটে, তবে তার প্রতি মুগ্ধতাও প্রকাশ করেছেন। জানতে পেরেছেন মিয়ানমারের মানুষের বিচিত্র জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি, খাবার, পোশাক। যার সবকিছুই লেখকের হৃদয় জয় করে নিয়েছে।

     উদ্দীপকের মাওসুলের অনুভূতিতে তেমন কোনো মুগ্ধতা প্রকাশের বিষয়টি নেই। এখানে মাওসুল কক্সবাজারে ভ্রমণে গেছে। যদিও কক্সবাজার সম্বন্ধে সে পূর্বে জেনেছে। কিন্তু তার চেয়ে দ্বিগুণ জিনিস সে দেখতে পেয়েছে। বাস্তবতাও যেন তার কাছে ছবির মতো সুন্দর হয়ে উঠেছে। কিন্তু এতে তার মধ্যে মুগ্ধতা প্রকাশের সামান্য ছাপও নেই। তাছাড়া কক্সবাজারের মানুষের জীবনযাত্রা প্রণালির বর্ণনাও অনুপস্থিত।

     উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর লেখকের অনুভূতির আরও উদ্দীপকের মাওসুলের অনুভূতি এক নয়। 

 

প্রশ্ন -৪ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

নামটাই মায়া জাগানিয়া ভালোরিয়া। ইতালিয়ান ভূমধ্যসাগরের পশ্চিম সৈকতের তীরে গড়ে ওঠা নির্জন  এ শহর যৌবন পেরিয়ে চলে গিয়েছিল বার্ধক্যে। শহরেরও জীবন আছে। আমাদের অলক্ষে শহরের বয়স বাড়ে। ঠিকমতো যতœ না নিলে মরেও যায়। মানবসভ্যতায় অনেক বড় বড় শহর মরে গেছে এভাবে। ভালোরিয়াও মরে যাচ্ছিল প্রায়। আর সব শহরের মতো এখানেও ছিল একই সমস্যা। কাজের সন্ধানে সব তরুণ পাড়ি জমাচ্ছিল মিলান, রোমের মতো বড় শহরে। একটি সময় এলো, যখন শহরের বাসিন্দা মাত্র ৩০ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।

ক. পূর্বে স্বাধীন আরাকান রাজ্য কোন সাগরের কাছাকাছি ছিল? ১

খ. মিয়ানমারের মেয়েরা রাস্তার পাশে দোকান নিয়ে বসে কেন? ব্যাখ্যা কর।  ২

গ. উদ্দীপকের ভালোরিয়া শহরের সাথে ‘মংডুর পথে’ রচনায় বর্ণিত মিয়ানমারের তুলনা কর।  ৩

ঘ.“উদ্দীপকটি ‘মংডুর পথে’ রচনার সামগ্রিকভাব ধারণ করে না।” মতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪


  ৪নং প্রশ্নের উত্তর  


ক. পূর্বে স্বাধীন আরাকান রাজ্য আন্দামান সাগরের কাছাকাছি ছিল।


খ. মিয়ানমারের মেয়েরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য রাস্তার পাশে দোকান নিয়ে বসে।

     মিয়ানমারের মেয়েরা অর্থনৈতিকভাবে অনেক বেশি স্বাধীন। মিয়ানমারের খাবারের দোকানগুলোর মালিক মহিলারা। একেবারেই ঝুপড়ি দোকানে বসে মহিলারা বেচাকেনা করে। সেখানে যেসব রেস্তরাঁ রয়েছে সেগুলোর মালিকও মহিলা। সেখানে মহিলারা নিজেদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলতেই অর্থোপার্জনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।


গ. অবস্থানগত দিক থেকে মিয়ানমার ও ভালোরিয়ার মধ্যে মিল থাকলেও অর্থনৈতিক দিক থেকে তাদের মধ্যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে।

     মিয়ানমার ও ভালোরিয়া উভয়ই নদী তীরবর্তী শহর হলেও অর্থনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ভ্রমণকাহিনীটিতে দেখা যায়, নাফ নদীর তীরে গড়ে ওঠা আরাকান রাজ্যের সাবেক রাজধানী ম্রাউক-উ ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও নতুন উদ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে মিয়ানমারের ব্যবসায়-বাণিজ্য, নতুন রূপে গড়ে উঠেছে মিয়ানমার শহর। এ শহরের মেয়েরা নিজেদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে রাস্তার পাশে ঝুপড়ি দোকান সাজিয়ে বসেছে। রেস্তরাঁর মালিকও মেয়েরা। স্থানীয় মুসলমানরা প্যাইকা চালক, হিন্দুরাও স্বাধীন ব্যবসায় করছে। তরিকারি, মাছের দোকান দিয়েছে। এ শহরের মানুষকে জীবিকার সন্ধানে অন্যত্র যেতে হয়নি।

     উদ্দীপকে দেখা যায়, ইটালিয়ান ভূমধ্যসাগরের পশ্চিম সৈকতের তীরে গড়ে ওঠা ছোট শহর ভালোরিয়া। শহরটি ছিল মৃতপ্রায়। সেখানে লোকসংখ্যা মাত্র তিরিশ জন। কারণ সেই শহরে কোনো কাজ ছিল না। কাজের সন্ধানে সবাই মিলান, রোম প্রভৃতি শহরে চলে যাচ্ছিল। এসব বিষয় বিবেচনা করে বলা যায়, ভালোরিয়া শহরের তুলনায় মিয়ানমারের অথনৈতিক অবস্থা বেশ সচ্ছল ছিল।


ঘ. উদ্দীপকটি ‘মংডুর পথে’ রচনাটির সামগ্রিক ভাব ধারণ করে না।”-। মন্তব্যটি যথার্থ। 

     ‘মংডুর পথে’ রচনায় লেখকের নদী তীরবর্তী মিয়ানমারের পশ্চিম সীমান্তের শহর মংডু ভ্রমণের সামগ্রিক অভিজ্ঞতার প্রকাশ লক্ষণীয়। এ রচনায় মংডুর মানুষের খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য অর্থাৎ উক্ত দেশের গোটা সংস্কৃতিই ফুটে উঠেছে। অর্থনৈতিকভাবে এদেশের মেয়েরা অনেক বেশি স্বাধীন সে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে স্থান পেয়েছে। 

     উদ্দীপকে শুধু মৃতপ্রায় ভালোরিয়া শহরের অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে এ শহরের সব তরুণ কাজের জন্য অন্যত্র পাড়ি জমায়। ফলে শহরের জনসংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ৩০ জনে। এই বিষয়টি ‘মংডুর পথে’ রচনায় বর্ণিত শুধু অর্থনৈতিক অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। কিন্তু এ রচনায় বর্ণিত অন্যান্য বিষয় এখানে অনুপস্থিত।

     উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, উদ্দীপকটি আলোচ্য রচনার সামগ্রিক ভাব ধারণ করে না।


প্রশ্ন -৫ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ব্রিয়াংকা জার্মানি থেকে বাংলাদেশে এসেছে একটি গবেষণামূলক কাজে। নদী ভাঙা অঞ্চলের মানুষের সামাজিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য। সিরাজগঞ্জের একটি গ্রামে এসে উঠেছে সে, এখানকার বেশিরভাগ রাস্তাঘাট কাঁচা। গ্রামের আশপাশে, ভেতরে আম, জাম, কাঁঠালের অনেক গাছ। গ্রামের বেশিরভাগ পুরুষ কৃষিকাজ করে আর মহিলারা ঘরে কাজ করে। এখানকার বাড়িগুলো টিনের তৈরি। বেশিরভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

ক. বিপ্রদাশ বড়–য়ার উপন্যাসের নাম কী? ১

খ. ‘তাহলে কী করে দেশের সব মানুষের সঙ্গে আমার সখ্য নিবিড় হবে’- ব্যাখ্যা কর।  ২

গ. উদ্দীপকের উল্লিখিত বাংলাদেশের গাছপালার সঙ্গে ‘মংডুর পথের’ ভ্রমণকাহিনির গাছপালার সাদৃশ্য দেখাও।  ৩

ঘ.‘প্রতিবেশী দেশ হওয়ার পরও বাংলাদেশের অনেক গ্রামের অবকাঠামোগত দিক মংডুর চেয়ে আলাদা’- উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। ৪


  ৫নং প্রশ্নের উত্তর  


ক. বিপ্রদাশ বড়–য়ার উপন্যাসের নাম ‘মুক্তিযোদ্ধারা’।


খ. চট্টগ্রামের রাখাইনদের সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতার কথা ভেবে লেখক বলেছেন, ‘তাহলে কী করে দেশের সব মানুষের সঙ্গে আমার সখ্য নিবিড় হবে।’

     লেখক মংডুতে গিয়ে উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে, বাংলাদেশের যেসব ক্ষুদ্র জাতিসত্তা আছে তাদের সম্পর্কে লেখক কিছুই জানেন না। তাদের খাদ্যাভ্যাস, আচার-আচরণ, ভাষা-সংস্কৃতিতে ভিন্নতা রয়েছে। এসব সংস্কৃতি তৈরি করে একটি দেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিমÐল। আর এগুলো সম্পর্কে না জানলে যে নিজের দেশের সাথে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে না, লেখক এখানে তাই বোঝাতে চেয়েছেন।


গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বাংলাদেশের গাছপালার সঙ্গে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর গাছপালার সাদৃশ্য রয়েছে।

     মংডু মিয়ানমারের একটি শহর। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও চোখে পড়ার মতো। মংডুতে রয়েছে নানান প্রজাতির গাছ। বৃষ্টি শিরীষ, আম, কাঁঠাল, কৃষ্ণচ‚ড়া সবই আছে। পদাউকের সোনার ফুলও ফুটেছে। মংডুতে ব্রিটিশ আমলের কিছু গাছও রয়েছে, আছে তেঁতুল এবং কমবয়সি নারকেল গাছ। কাঠগোলাপ ও সোনালু গাছও আছে। তবে নারকেল গাছ সর্বত্র।

     উদ্দীপকে বাংলাদেশের একটি গ্রামের বর্ণনা রয়েছে। আম, জাম, কাঁঠাল গাছ সেই গ্রামের শোভাবর্ধন করেছে। বাংলাদেশের একটি গ্রামে যেমন এ গাছগুলো রয়েছে তেমনি আছে মিয়ানমারের মংডুতেও। তাই বলা যায়, উভয় স্থানের পথের চারপাশের গাছপালার সাদৃশ্য রয়েছে। 


ঘ. “প্রতিবেশী দেশ হওয়ার পরও বাংলাদেশের অনেক গ্রামের অবকাঠামোগত দিক মিয়ানমারের শহর মংডুর চেয়ে আলাদা”- উক্তিটি যথার্থ।

     মিয়ানমারের নদী তীরবর্তী শহর মংডু। নদীকে কেন্দ্র করেই ব্যবসায়-বাণিজ্য আবর্তিত হয়েছে। এখানকার বাড়িগুলো রাস্তার দু’পাশে এবং বাড়ির নিচে দোকান। ভেতরের বাড়িগুলো সেগুন কাঠের থাম বা পাকা থামের ওপর। বেশিরভাগ দোকানের এবং রেস্তরাঁর মালিক মহিলারা। মহিলারা স্বাধীনভাবে ব্যবসায় করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমানের বাস থাকলেও ধর্মযাজক হিসেবে বৌদ্ধভিক্ষুদের আলাদা সম্মান রয়েছে।

     উদ্দীপকে বাংলাদেশের নদীভাঙা একটি গ্রামের (সিরাজগঞ্জ) মানুষের কথা বলা হয়েছে। কারণ ব্রিয়াংকা এসেছে নদীভাঙা মানুষের সামাজিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য। যে গ্রামের রাস্তা  মাটির তৈরি। বন্যার কারণে এখানকার বেশিরভাগ মানুষ টিনের তৈরি বাড়িতে থাকে।

     তাই উল্লিখিত আলোচনার শেষে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, মিয়ানমার বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ হওয়ার পরেও অবকাঠামোগত দিক থেকে মিয়ানমার বাংলাদেশ থেকে অনেকটাই ভিন্ন।


প্রশ্ন -৬ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলমান। মুসলমানদের উপাসনালয়ের নাম মসজিদ। মসজিদে নামাজ পড়ান ইমাম সাহেব। ইমাম সাহেব লম্বা জোব্বা পরেন, পায়জামাও পরেন। অবশ্য সেই পায়জামা পায়ের গিরার ওপর পর্যন্ত পরতে হয়। এটি ইসলামি নিয়ম। ইমাম সাহেবের মাথায় থাকে টুপি এবং মুখে দাঁড়ি। যেকোনো মুসলিম দেশে ইমাম সাহেবদের সম্মানের চোখে দেখা হয়।

ক. ‘চীবর’ কী? ১

খ. লেখক মংডুতে বোরকা পরা মহিলার ছবি তুলতে গেলে ছাতা দিয়ে সে আড়াল তুলে দিল কেন? ২

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ইমাম সাহেবের পোশাকের সঙ্গে ফুঙ্গিদের পোশাকের বৈসাদৃশ্য দেখাও। ৩

ঘ.‘প্রত্যেক ধর্মের মানুষের কাছে ধর্মযাজকরা সম্মানের পাত্র।’- উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘মংডুর পথে’ রচনার আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪

  

৬নং প্রশ্নের উত্তর  


ক. ‘চীবর’ হলো বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গৈরিক পোশাকবিশেষ।


খ. বোরকা পরা মহিলা পর্দা রক্ষা করার জন্য ছাতা দিয়ে আড়াল তুলে দিল।

     লেখক হাঁটতে হাঁটতে দেখতে পান বোরকা পরা মহিলা। মহিলাটি পাইক্যায় যাচ্ছে। তার মাথায় ছাতা। লেখক তার ছবি তুলতে চাচ্ছেন বুঝতে পেরে সে ছাতা দিয়ে মুখ আড়াল করে ফেলে। কারণ ইসলাম ধর্মের বিধান লঙ্ঘন করতে সে চায়নি। চায়নি বলেই সে সাধারণ পোশাকের বদলে বোরকা পরেছে।


গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ইমাম সাহেবের পোশাকের সঙ্গে ফুঙ্গিদের পোশাকের বৈসাদৃশ্য রয়েছে।

     প্রত্যেক ধর্মের রয়েছে নিজস্ব ধর্মযাজক। তাই ধর্মগুরু হিসেবে তাদের পোশাকেও ভিন্নতা দেখা যায়। ‘মংডুর পথে’ রচনাটিতে দেখা যায়, মিয়ানমার বৌদ্ধপ্রধান দেশ। বৌদ্ধধর্মের যাজকদের বলা হয় ফুঙ্গি বা ভিক্ষু। ভিক্ষুদের রয়েছে ভিন্ন ধরনের পোশাক। ভিক্ষুদের পরিধেয় চীবর সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতো। গায়ে আলাদা আরেক টুকরো চীবর থাকে। হাত ঢাকা ও এক কাঁধ কাটা একটি গেঞ্জি থাকে, কোমরে বেল্ট জাতীয় অর্থাৎ সেলাই করা কাপড়ের কোমর বন্ধনী থাকে। এসব মিলে হয় ত্রিচীবর। ভিক্ষুদের চীবর নিয়মানুযায়ী অনেক জোড়া দিয়ে সেলাই করা হয়।

     উদ্দীপকে মসজিদের ইমাম সাহেব সম্পর্কে বলা হয়েছে। ইমাম সাহেবের পোশাক ফুঙ্গিদের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের। তারা লম্বা জোব্বা এবং পায়জামা পরেন। তাদের মাথায় বিশেষ ধরনের টুপি থাকে। ইমাম সাহেব নিয়মানুসারে পায়জামা পরেন পায়ের গিরার ওপর পর্যন্ত, তাদের মুখে দাঁড়ি রাখা আবশ্যক। অতএব দেখা যাচ্ছে, উদ্দীপকে বর্ণিত ইমাম সাহেবের সঙ্গে ফুঙ্গিদের পোশাকের বৈসাদৃশ্য লক্ষণীয়।


ঘ. প্রতিটি ধর্মের মানুষের কাছে ধর্মযাজকরা অনেক সম্মানের পাত্র হয়ে থাকেন।

     ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীতে দেখা যায়, বৌদ্ধ ধর্মপ্রধান দেশ মংডু। বৌদ্ধ ধর্মের যাজকদের বলা হয় ফুঙ্গি। মিয়ানমারের পথঘাটে, বাসের ছাদে সব জায়গাতে ফুঙ্গিদের দেখতে পাওয়া যায়। সকালে তারা খালি পায়ে ভিক্ষা করতে বের হন। ভিক্ষাই তাদের জীবিকা। ফুঙ্গিরা বিশেষ ধরনের পোশাক পরেন। বার্মার মানুষের কাছে তারা খুব সম্মানের।

     উদ্দীপকে বাংলাদেশের ইমাম সাহেবদের সম্পর্কে বলা হয়েছে। ইমাম সাহেব মসজিদে নামাজ পড়ান। পোশাক থেকে শুরু করে সব ব্যাপারে ধর্মের নিয়মনীতি তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন। তিনি ভালো গুণাবলির দ্বারা মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেন।

     ইমাম সাহেবের মতো মিয়ানমারের ফুঙ্গিরাও ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করার জন্য সবার কাছে সম্মান পেয়ে থাকেন। উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, প্রত্যেক ধর্মের মানুষের কাছে ধর্মযাজকরা সম্মানের পাত্র।


প্রশ্ন -৭ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

সাদিয়ারা সপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে বার্মিজ মার্কেটে কেনাকাটা করতে যায়। সে দেখল সেখানকার বেশিরভাগ দোকানেই রাখাইন মেয়েরা নানা রকম জিনিস বিক্রি করছে। কসমেটিকস, পোশাক, এমনকি খাবারের দোকানেও তাদের একচেটিয়া অধিকার। তাদের পরনে থামি (মেয়েদের সেলাইবিহীন লুঙ্গি)। সাদিয়ার মনে হলো, রাখাইন মেয়েরা বেশ স্বাধীনভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে।

ক. মিয়ানমারের সবাই কী পরে? ১

খ. পাইক্যা যানবাহনটি কেমন?  ২

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘মংডুর পথে’ রচনার কোন দিকটির সম্পর্ক রয়েছে- ব্যাখ্যা কর।  ৩

ঘ.‘উদ্দীপকে যেন মিয়ানমারের স্বাধীন নারীদের চিত্রটিই প্রতিভাত হয়ে উঠেছে।’ -উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর। ৪

  

৭নং প্রশ্নের উত্তর  


ক. মিয়ানমারের সবাই লুঙ্গি পরে।


খ. পাইক্যা হলো এক ধরনের তিন চাকার রিকশা, যা মিয়ানমারসহ মংডুর সর্বত্র দেখা যায়।

     পাইক্যা তিন চাকার রিকশা হলেও এটি অনেকটা মোটরবাইকের মতো। মোটরবাইকের পাশে আরেকটি চাকা লাগিয়ে ক্যারিয়ারে বউ বাচ্চা নেয়ার মতো যেমন জায়গা থাকে, পাইক্যাও তেমনি এক ধরনের যানবাহন।


গ. রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ণনার দিক দিয়ে উদ্দীপক ও ‘মংডুর পথে’ রচনার সম্পর্ক রয়েছে।

     ‘মংডুর পথে’ রচনায় লেখক রাখাইন সম্প্রদায়ের নারীদের কথা লিখেছেন। সেখানকার রাখাইন নারীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসায়-বাণিজ্য করে। তারাই দোকানের মালিক। সেখানকার মহিলারা থামি পরে। আবার এই রাখাইন সম্প্রদায়ের লোক যেমন মংডুতে আছে, তেমনি বাংলাদেশের কক্সবাজার ও পটুয়াখালীতেও আছে। বাংলাদেশের সেই রাখাইন সম্প্রদায়ের কথাই উদ্দীপকে বলা হয়েছে।

     উদ্দীপকেও কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়েছে। সেখানকার বার্মিজ মার্কেটে রাখাইন নারীরা কেনাবেচা করে। কসমেটিকস, কাপড় এবং খাবারের দোকানেও তারাই বিক্রেতা। তাদের পরনে থামি। তারা বেশ স্বাধীনভাবেই জীবিকা নির্বাহ করে। এ বিষয়টি ‘মংডুর পথে’ রচনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।


ঘ. “উদ্দীপকে যেন মিয়ানমারের স্বাধীন নারীদের চিত্রটিই প্রতিভাত হয়ে উঠেছে।”- উক্তিটি যথার্থ।

     ‘মংডুর পথে’ রচনায় লেখক রাখাইন নারীদের স্বাধীন জীবনযাপনের কথা তুলে ধরেছেন। মিয়ানমার ভ্রমণকালীন লেখকের অভিজ্ঞতা তিনি এ রচনায় লিখেছেন। সেখানকার নারীদের তিনি স্বাধীনভাবে ব্যবসায়-বাণিজ্য করতে দেখেছেন। মেয়েরাও ঝুপড়ি দোকান কিংবা ভাসমান খাবার দোকানের  ও রেস্তরাঁর মালিক। লেখক তাই বলেছেন, ‘মহিলারা চির স্বাধীন। দোকানের মালিক তারা। অর্থনৈতিকভাবে তারা অনেক বেশি স্বাধীন।’ এখানেও আমরা মেয়েদেরকে বার্মার নারীদের মতোই স্বাধীনভাবে জীবিকা নির্বাহ এবং ব্যবসায়-বাণিজ্য করতে দেখি।

     উদ্দীপকটিতে বাংলাদেশের রাখাইন নারীদের কথা বলা হয়েছে। সাদিয়ারা কক্সবাজারে বার্মিজ মার্কেটে কেনাকাটার জন্য গিয়ে দেখল, সেখানকার বেশিরভাগ দোকানেই রাখাইন মেয়েরা জিনিস বিক্রি করছে। কসমেটিকস, পোশাক এবং খাবারের দোকানদারও তারাই। সাদিয়ার মনে হলো এরা বেশ স্বাধীনভাবেই জীবিকা নির্বাহ করছে।

     উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, উদ্দীপকের রাখাইন নারীদের মধ্যে মিয়ানমারের স্বাধীন নারীদের চিত্রই প্রতিভাত হয়েছে।


সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক


প্রশ্ন-৮ 

মাসুদ সাহেব থাইল্যান্ড যান বেড়ানোর জন্য। সেখানে তিনি মানুষের জীবনাচরণের নানা দিক সম্পর্কে জানতে পারেন। থাইল্যান্ডের ছেলেমেয়ে সবাই প্যান্ট ও টিশার্ট পরে। তবে ঝলমলে ব্লাউজ জাতীয় জামা পরতেও তাদের দেখা যায়। আর থাইল্যান্ডের রাস্তায় রিকশা খুব একটা নজরে পড়ে না। সেখানে রিকশার বদলে পাইক্যা চলে। এসব যানবাহন দিয়েই মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বেড়াতে যায়।

ক. মিয়ানমারের পূর্ব নাম কী?  ১

খ. ইউনাইটেড হোটেলে লেখকদের জায়গা হলো না কেন?  ২

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত থাইল্যান্ডের জীবনাচরণের সঙ্গে মিয়ানমারের মংডুর বৈসাদৃশ্য কোথায়? নিরূপণ কর।  ৩

ঘ. ‘কিছু বৈসাদৃশ্য থাকলেও থাইল্যান্ডের সঙ্গে মংডুর সাদৃশ্য রয়েছে’- মন্তব্যের যথার্থতা নিরূপণ কর।  ৪


প্রশ্ন-৯ 

সিজান তার মামার সাথে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিল। কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করেছে। সেখানকার রাস্তাঘাট অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন। কাশ্মীরি খাবারের স্বাদ কখনো ভুলতে পারবে না সিজান। কাশ্মীরি শাল বহির্বিশ্বে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে। সিজানের স্মৃতিপটে খোদাই হয়ে আছে কাশ্মীরের স্মৃতি।

ক. আলাওল কোন শতকের কবি?  ১

খ. ‘সারা ভ্রমণ এভাবে অপূর্ণ কথাবার্তা বলতে হবে’- ব্যাখ্যা কর। ২

গ. উদ্দীপকে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনীর কোন দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে- ব্যাখ্যা কর।  ৩

ঘ. ‘ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ একটি দেশের নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে’- উদ্দীপক ও ‘মংডুর পথে’ রচনার আলোকে বিশ্লেষণ কর।  ৪


নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Telegram Group Join Now
Our Facebook Page Join Now
Class 8 Facebook Study Group Join Now
Class 7 Facebook Study Group Join Now
Class 6 Facebook Study Group Join Now

Post a Comment