ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন্স (উত্তরপত্রসহ) | Class 6 History and Social Science Annual Exam Suggestions
বার্ষিক পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি সাজেশন্স
ষষ্ঠ শ্রেণি
বিষয়: ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান
মাধ্যমিক ও দাখিল সকল শিক্ষার্থীদের জন্য
১। এক বাক্যে উত্তর:
ক) বিজ্ঞানের তথ্যকে কীভাবে যাচাই-বাছাই করা যায়?উত্তর: পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে।
খ) অনুসন্ধান কাজের উত্তরদাতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের শুরুতেই কী করতে হয়?
উত্তর: প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তৈরি করতে হয়।
গ) আমরা চারপাশের নানা প্রশ্নের উত্তর কীভাবে পাই?
উত্তর: পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে।
ঘ) অনুসন্ধান বা গবেষণা কীভাবে করতে হয়?
উত্তর: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে।
ঙ) বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবেষণার সর্বশেষ ধাপ কোনটি?
উত্তর: সিদ্ধান্ত উপস্থাপন।
চ) প্রতিফলনের কাজটি কখন করতে হয়?
উত্তর: তথ্য সংগ্রহ শেষে।
ছ) অনুসন্ধানের প্রশ্নের মধ্যে থাকা মূল বিষয়গুলো কেমন হবে?
উত্তর: সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট।
জ) জীবাশ্ম বা ফসিল কী?
উত্তর: প্রাগৈতিহাসিক জীবের অবশেষ।
ঝ) পাথরের যুগের কয়টি পর্যায় রয়েছে?
উত্তর: তিনটি—প্রস্তর যুগ, মধ্যপ্রস্তর যুগ, নবপ্রস্তর যুগ।
ঞ) বাংলা অঞ্চলে কৃষি বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল কখন?
উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ২০০০-১৫০০ অব্দে।
ট) 'Man Makes Himself' গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর: ভি. গর্ডন চাইল্ড।
ঠ) পৃথিবীর দীর্ঘতম নদ কোনটি?
উত্তর: নীল নদ।
ড) নীল নদের উৎপত্তিস্থল কোথায়?
উত্তর: লেক টানা, ইথিওপিয়া।
ঢ) সৌরপঞ্জিকা কারা রচনা করেছিল?
উত্তর: মিশরীয়রা।
ণ) মিশরীয় সভ্যতা বিকাশের অন্যতম প্রধান প্রভাবক কী ছিল?
উত্তর: নীল নদ।
ত) ইতিহাসের জনক কে?
উত্তর: হেরোডোটাস।
থ) টেরাকোটা ইতিহাসের কোন ধরনের উৎস?
উত্তর: প্রত্নতাত্ত্বিক উৎস।
দ) মানুষের অতীতের অভিজ্ঞতাকে কী বলে?
উত্তর: ঐতিহ্য।
ধ) ইতিহাসের দুইটি অলিখিত উৎসের নাম লেখো।
উত্তর: লোককাহিনি, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।
ন) স্বাধীন বঙ্গ রাজ্য গড়ে উঠেছিল কত শতকে?
উত্তর: দশম শতকে।
প) বঙ্গভঙ্গ বা বাংলা ভাগ করা হয় কত সালে?
উত্তর: ১৯০৫ সালে।
ফ) ছয় দফা আন্দোলন সংঘটিত হয় কত সালে?
উত্তর: ১৯৬৬ সালে।
ব) কত সালে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়?
উত্তর: ১৯৬৯ সালে।
ভ) সেন রাজারা কোথা থেকে এসেছিল?
উত্তর: দক্ষিণ ভারত থেকে।
ম) লখনৌতি বর্তমান ভারতের কোথায়?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের মালদা।
য) পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয় কত সালে?
উত্তর: ১৭৫৭ সালে।
র) বিশ্বের প্রায় কত শতাংশ এলাকা পর্বতময়?
উত্তর: ২৪%।
ল) ধর্মগোলা সমিতির সদস্য কারা?
উত্তর: কৃষক।
শ) সামাজিক কাঠামোর ভিত্তি কী?
উত্তর: পরিবার।
ষ) মানুষের প্রথম সামাজিক দল বা সংগঠন কী?
উত্তর: পরিবার।
স) মানুষের বিশ্বাস ও ভালো-মন্দের বোধকে কী বলে?
উত্তর: সংস্কৃতি।
হ) বাংলাদেশের কোন জেলায় মস্ত বড় হাওড় আছে?
উত্তর: কিশোরগঞ্জ।
ড়) সামাজিক কাঠামো মানুষকে কী দেয়?
উত্তর: সুরক্ষা ও পরিচয়।
ঢ়) প্রাকৃতিক সম্পদ কত প্রকার?
উত্তর: দুই প্রকার—নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য।
য়) দুইটি মানবসম্পদের উদাহরণ লেখো।
উত্তর: শিক্ষক, চিকিৎসক।
ৎ) দুইটি প্রাকৃতিক সম্পদের উদাহরণ লেখো।
উত্তর: পানি, খনিজ তেল।
১) নবায়নযোগ্য সম্পদের দুইটি উদাহরণ লেখো।
উত্তর: সূর্যালোক, বায়ু।
২) অনবায়নযোগ্য সম্পদের দুইটি উদাহরণ লেখো।
উত্তর: খনিজ তেল, কয়লা।
৩) যেসব জিনিস আমরা সরাসরি ব্যবহার করি সেগুলোকে কী বলে?
উত্তর: ভোগ্য পণ্য।
৪) যেসব জিনিস বিক্রি করার জন্য তৈরি হয় সেগুলোকে কী বলে?
উত্তর: বাণিজ্য পণ্য।
২। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর:
ক) গবেষণা বলতে কী বোঝো?উত্তর:গবেষণা হলো একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে নতুন তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং বিদ্যমান তথ্যের সাথে তুলনা করে কোনো নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা হয়। এটি অনুসন্ধানের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান, নতুন আবিষ্কার বা বিদ্যমান তত্ত্ব যাচাইয়ে সহায়ক হয়।
খ) সামাজিক পরিবর্তন কাকে বলে?
উত্তর:সামাজিক পরিবর্তন হলো সমাজের গঠন, মূল্যবোধ, রীতিনীতি, এবং সাংস্কৃতিক অভ্যাসের পরিবর্তন। সময়ের সাথে সাথে যখন একটি সমাজে মানুষের আচরণ, অর্থনৈতিক কাঠামো, প্রযুক্তি বা সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটে, তখন তাকে সামাজিক পরিবর্তন বলে। যেমন, ডিজিটাল প্রযুক্তি এসে সামাজিক যোগাযোগের ধরনে পরিবর্তন এনেছে।
গ) তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি বা কৌশল বলতে কী বোঝো?
উত্তর:তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি হলো তথ্য সংগৃহীত করার বিভিন্ন উপায়। এটি এমন কৌশলসমূহের সমন্বয় যেগুলো অনুসন্ধানের জন্য তথ্য পাওয়ার উৎস হিসেবে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ, সাক্ষাৎকার, জরিপ, প্রশ্নমালা, এবং পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিগুলির মাধ্যমে গবেষক নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
ঘ) তথ্য বিশ্লেষণ বলতে কী বোঝো?
উত্তর:তথ্য বিশ্লেষণ হলো সংগৃহীত তথ্যের অর্থপূর্ণ ব্যাখ্যা ও মূল্যায়ন, যা গবেষণার প্রশ্নের উত্তরে সহায়তা করে। তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে তথ্যের কাঠামো ও তত্ত্বগুলোকে বিশ্লেষণ করে একটি অর্থবোধক উপসংহার তৈরি করা হয়, যা গবেষণার লক্ষ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
ঙ) সামাজিক অনুসন্ধান পদ্ধতির চারটি ধাপের নাম লেখো।
উত্তর:সামাজিক অনুসন্ধান পদ্ধতির চারটি ধাপ হলো:
১. সমস্যা বা প্রশ্ন চিহ্নিতকরণ
২. তথ্য সংগ্রহ
৩. তথ্য বিশ্লেষণ
৪. সিদ্ধান্ত বা উপসংহার উপস্থাপন
চ) জীবাশ্ম বা ফসিল কাকে বলে?
উত্তর:জীবাশ্ম বা ফসিল হলো প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী বা উদ্ভিদের অবশিষ্টাংশ বা চিহ্ন, যা মাটি বা শিলায় সংরক্ষিত থাকে। জীবাশ্মের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ভূতাত্ত্বিক যুগের জীবজগতের বিবর্তন সম্পর্কে জানতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ডাইনোসরের হাড় বা গাছের অবশিষ্টাংশ।
ছ) মিশরে কীভাবে সৌর পঞ্জিকা চালু করা হয়?
উত্তর:মিশরে সৌর পঞ্জিকা চালু করা হয় নীলনদের বন্যার সময়কাল নির্ধারণের মাধ্যমে। মিশরীয়রা নীলনদের উপর ভিত্তি করে বছরের তিনটি ঋতুতে (বন্যা, বপন এবং ফসল কাটার সময়) বিভক্ত করে সৌর পঞ্জিকা চালু করেছিল। এতে এক বছর ৩৬৫ দিনে বিভক্ত করা হয়।
জ) বিশ্বের প্রথম নগর সভ্যতা বিকাশে নীলনদ কীভাবে ভূমিকা রেখেছিল?
উত্তর:নীলনদ মিশরে কৃষি, পানি সরবরাহ ও পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। নীলনদের বন্যার পানি মাটিকে উর্বর করত, যা ফসল উৎপাদনে সহায়ক ছিল এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছিল। এর ফলে সেখানে প্রথম নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।
ঝ) মানব সভ্যতার দ্বিতীয় বিপ্লব বলতে কী বোঝো?
উত্তর:মানব সভ্যতার দ্বিতীয় বিপ্লব হলো কৃষি বিপ্লব, যখন মানুষ শিকার ও খাদ্য সংগ্রহ বাদ দিয়ে কৃষিকাজ ও পশুপালন শুরু করে। এই বিপ্লবের ফলে মানুষের খাদ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা গড়ে ওঠে এবং স্থায়ী বসতি স্থাপন সম্ভব হয়, যা সভ্যতার বিকাশে ভূমিকা রেখেছে।
ঞ) আদিম যুগের মানুষ গোত্র গড়ে তুলেছিল কেন?
উত্তর:আদিম যুগে মানুষ বেঁচে থাকা, নিরাপত্তা ও খাদ্য সংগ্রহের প্রয়োজনে গোত্র গড়ে তুলেছিল। গোত্রের মাধ্যমে শিকারের কাজে সহযোগিতা, সুরক্ষা এবং তথ্যের আদান-প্রদান সহজতর হয়, যা তাদের জীবনধারণে সাহায্য করত।
ট) জনপদ বলতে কী বোঝো?
উত্তর:
জনপদ হলো প্রাচীন জনগোষ্ঠীর বসবাসের এলাকা, যেখানে কৃষি, ব্যবসা এবং বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হত। সাধারণত নদী বা অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের কাছে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাচীন বাংলার উল্লেখযোগ্য জনপদগুলোর মধ্যে পুণ্ড্র, গৌড়, বঙ্গ, এবং সমতট অন্তর্ভুক্ত। জনপদগুলি সমাজের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামো গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ঠ) কৃষি বিপ্লব বলতে কী বোঝো?
উত্তর:কৃষি বিপ্লব হলো সেই প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানুষ খাদ্য সংগ্রহের পরিবর্তে ফসল চাষ ও গৃহপালিত পশুপালন শুরু করে। এর ফলে স্থায়ী বসতি গড়ে ওঠে এবং মানুষের জীবনধারা পরিবর্তিত হয়। কৃষি বিপ্লব সভ্যতার প্রথম ভিত্তি স্থাপনে সহায়তা করেছে।
ড) বিহার বলতে কী বোঝো?
উত্তর:বিহার হলো প্রাচীন ভারতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য নির্মিত আশ্রম বা বসবাসের স্থান, যেখানে তারা ধর্মচর্চা এবং শিক্ষা গ্রহণ করতেন। এই স্থানগুলি ছিল তপস্যা, ধর্মীয় আলোচনা ও জীবনযাপনের কেন্দ্র।
ঢ) সামাজিক কাঠামো বলতে কী বোঝো?
উত্তর:সামাজিক কাঠামো হলো সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তি, দল, এবং প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যকার সম্পর্ক ও দায়িত্বের বিন্যাস। এর মাধ্যমে মানুষ সমাজে নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে এবং সামাজিক নিয়ম-কানুন মেনে চলে। সামাজিক কাঠামো পরিবার, অর্থনীতি, ধর্ম, এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি নিয়ে গঠিত।
ণ) সংস্কৃতি বলতে কী বোঝো?
উত্তর:সংস্কৃতি হলো কোনো সমাজের বিশ্বাস, আচার-আচরণ, ভাষা, শিল্পকলা, এবং সামাজিক মূল্যবোধের সমষ্টি। এটি একটি জাতির পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সংরক্ষিত থাকে।
ত) আইন কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:আইন হলো একটি সমাজে বা রাষ্ট্রে সব মানুষের জন্য প্রযোজ্য এবং মান্যযোগ্য নিয়মাবলী। আইন মানুষের অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারণ করে, যা সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
থ)মানবসম্পদ বলতে কী বোঝো?
উত্তর:মানবসম্পদ হলো মানুষের জ্ঞান, দক্ষতা, এবং কাজ করার ক্ষমতা, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখে। শিক্ষক, চিকিৎসক, এবং প্রকৌশলী প্রভৃতি কর্মী মানবসম্পদের উদাহরণ, যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ করে।
দ)দ) সম্পদ সংরক্ষণ প্রয়োজন কেনো?
উত্তর:ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা মেটাতে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সম্পদ সংরক্ষণ প্রয়োজন। অপচয় কমানো এবং পরিবেশ রক্ষায় সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ধ)প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে কী বোঝো?
উত্তর:প্রাকৃতিক সম্পদ হলো প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত এমন সম্পদ, যা মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়তা করে। এর মধ্যে পানি, খনিজ, বনসম্পদ, এবং জ্বালানি রয়েছে, যা অর্থনীতি ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
ন)দ্রব্য ও পণ্যের মধ্যে ২টি করে পার্থক্য লেখো।
উত্তর:১. দ্রব্য: এটি সাধারণত প্রয়োজন মেটাতে সরাসরি ব্যবহৃত হয়; যেমন—খাবার, পোশাক। পণ্য: এটি বিক্রি বা ব্যবসার জন্য প্রস্তুত করা হয়; যেমন—ফার্নিচার, ইলেকট্রনিক্স। ২. দ্রব্য: সাধারণত প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহৃত হয়। পণ্য: লাভ অর্জনের উদ্দেশ্যে বাজারে বিক্রি করা হয়।
রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর
ক) তথ্য কী? বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় তথ্য বিন্যাস বা বিশ্লেষণ কেন গুরুত্বপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: তথ্য হলো নির্দিষ্ট ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত উপাত্ত বা জ্ঞান, যা বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত হয়। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং বিন্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সঠিক এবং নির্ভুল সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়। বিন্যাস ও বিশ্লেষণ না করলে তথ্যের অর্থপূর্ণ সংযুক্তি ও ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়, ফলে অনুসন্ধানের মান ও নির্ভুলতা নিশ্চিত হয় না। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার ও তথ্যের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।
খ) প্রতিফলন বলতে কী বোঝো? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রতিফলন হলো একটি চিন্তন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানুষ কোনো বিষয় সম্পর্কে নিজে থেকে মূল্যায়ন করে এবং তা থেকে শিক্ষা নেয়। প্রতিফলনের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও কাজের মূল্যায়ন করতে পারে এবং পূর্বের ত্রুটি থেকে ভবিষ্যতে উন্নতির সুযোগ খুঁজে পায়। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বা শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিফলনের মাধ্যমে ব্যক্তি জ্ঞানের গভীরতা অর্জন করে এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়।
গ) প্রাচীন ভারতবর্ষের প্রথম নগর সভ্যতা সম্পর্কে বর্ণনা করো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতবর্ষের প্রথম নগর সভ্যতা হলো সিন্ধু বা হরপ্পা সভ্যতা, যা প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ থেকে ১৯০০ অব্দের মধ্যে বর্তমান পাকিস্তান ও ভারতের কিছু অংশে বিকাশ লাভ করে। এই সভ্যতায় উন্নত নগর পরিকল্পনা, পাকা বাড়ি, রাস্তাঘাট, জলনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং কাঁচামাল থেকে নির্মিত দ্রব্যাদির ব্যবহার ছিল। মোহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা ছিল এই সভ্যতার বিখ্যাত নগরী, যেখানে সভ্য মানুষরা বসবাস করত এবং তাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি এবং কারুশিল্পে দক্ষ ছিল।
ঘ) মিশরীয় সভ্যতায় নীলনদের প্রভাব কেমন ছিল ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মিশরীয় সভ্যতায় নীলনদ একটি জীবনরেখার মতো কাজ করত, যা মিশরের অর্থনীতি, কৃষি এবং পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। নীলনদের নিয়মিত বন্যা কৃষি জমিকে উর্বর করে তুলত এবং খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক হতো। নীলনদের মাধ্যমে মানুষ খাদ্য, পানি ও জীবনধারণের উপকরণ সহজে পেত, যা নগরায়ণ ও শিল্প বিকাশে সহায়তা করেছিল। এ কারণে মিশরীয়রা নীলনদকে "জীবনের উৎস" হিসেবে বিবেচনা করত এবং তাদের দেব-দেবী, ধর্মীয় আচার, এবং স্থাপত্যে নীলনদের প্রতিফলন দেখা যায়।
ঙ) জনপদ কী? প্রাচীন বাংলার জনপদ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: জনপদ হলো প্রাচীন জনগোষ্ঠীর বসবাসের একটি এলাকা, যা কৃষি, ব্যবসা এবং সমাজের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য গড়ে উঠেছিল। প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে পুণ্ড্র, গৌড়, বঙ্গ, সমতট উল্লেখযোগ্য। এসব জনপদে মানুষ কৃষিকাজ, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং স্থানীয় সম্পদ ব্যবহার করে উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। প্রাচীন বাংলার জনপদগুলো মূলত নদী তীরবর্তী স্থানে গড়ে উঠেছিল, যা যোগাযোগ এবং কৃষিতে সুবিধা দিত। এ জনপদগুলোতে মানুষ ধর্ম, সংস্কৃতি ও সামাজিক নিয়ম মেনে চলত।
চ) কৃষি বিপ্লবের ফলে বাংলা অঞ্চলে কীভাবে সামাজিক বৈষম্যের সূচনা হয় ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কৃষি বিপ্লবের ফলে বাংলায় জমি, সম্পদ ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে সমাজে শ্রেণিবিভাজন তৈরি হয়। যখন মানুষ শিকার ও সংগ্রহ ছেড়ে কৃষিকাজ শুরু করে, তখন ভূমি মালিকরা অধিক সম্পদ সংগ্রহ করতে থাকে এবং শ্রমিক বা কৃষকেরা তাদের উপর নির্ভরশীল হয়। জমির মালিকদের সামাজিক মর্যাদা বাড়তে থাকে, ফলে এক ধরণের শোষণমূলক সম্পর্ক তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে জমিদারি ব্যবস্থার সূত্রপাত করে। এভাবে কৃষি বিপ্লবের পর সামাজিক বৈষম্যের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
ছ) পাঠ্যবইয়ের আলোকে একটি ভূমিরূপ অভিধান কীভাবে তৈরি করবে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ভূমিরূপ অভিধান তৈরি করতে প্রথমে পাঠ্যবইয়ের ভূমিরূপ বিষয়ক অধ্যায়গুলোতে ব্যবহৃত বিশেষ শব্দগুলো শনাক্ত করতে হবে। এরপর প্রতিটি ভূমিরূপ যেমন—পর্বত, সমতলভূমি, উপত্যকা, দ্বীপ প্রভৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও সংজ্ঞা সংকলন করতে হবে। ছবি ও চিত্রাবলী যুক্ত করে প্রতিটি ভূমিরূপের বৈশিষ্ট্য, গঠন, উদাহরণসহ সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা দিতে হবে, যাতে পাঠক ভূমিরূপ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পায়।
জ) সামাজিক কাঠামোর অংশ হিসেবে পরিবারের কার্যাবলি বর্ণনা করো।
উত্তর: পরিবার সামাজিক কাঠামোর একটি মৌলিক অংশ, যা শিশুদের সামাজিকীকরণ, মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষাদান করে। পরিবার সদস্যদের আবেগ, আর্থিক ও শারীরিক সুরক্ষা দেয়। পরিবারের মাধ্যমে শিশুরা আদর্শ, রীতি, এবং সামাজিক আচরণ শিখে। এছাড়া পরিবার জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সদস্যদের সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদান করে এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব পালনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়।
ঝ) প্রাকৃতিক সম্পদ কী? প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় তোমার করণীয় ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রাকৃতিক সম্পদ হলো প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সম্পদ, যা মানব জীবনের উন্নয়ন ও টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয়। উদাহরণস্বরূপ, পানি, মাটি, খনিজ, বন ইত্যাদি। প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় আমাদের করণীয় হলো এগুলোর অপচয় রোধ, পুনর্ব্যবহারযোগ্য সম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি করা এবং পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা করা। যথাযথ পরিবেশ সংরক্ষণ, বৃক্ষরোপণ, এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে সহায়তা করে।
ঞ) সেবা কী? আমরা অন্যদের কীভাবে সেবাদান করি তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: সেবা হলো একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অন্য ব্যক্তির প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করে। সেবা প্রদান একটি মানবিক দায়িত্ব, যা পরিবার, সমাজ এবং সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা ও সংহতি বৃদ্ধি করে। আমরা শিক্ষা, চিকিৎসা, এবং নিরাপত্তার মাধ্যমে সেবা প্রদান করতে পারি। এছাড়াও, অন্যকে সহায়তা করা, সামাজিক কার্যকলাপে অংশ নেওয়া, এবং বিশেষ প্রয়োজনের সময়ে সহযোগিতা করা সেবার অন্তর্ভুক্ত।
৪। রচনামূলক প্রশ্ন (দৃশ্যপটনির্ভর):
শ্রেণির মানোপযোগী/বইয়ের মডেল টেস্টগুলো অনুশীলন করো।
ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন্স এর পিডিএফ পেতে নিচের ডাউনলোড বাটেনে ক্লিক করুন