ইসলাম শিক্ষা ষষ্ঠ শ্রেণি বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন বড় প্রশ্ন (দৃশ্যপটবিহীন)

ইসলাম শিক্ষা ষষ্ঠ শ্রেণি বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন বড় প্রশ্ন (দৃশ্যপটবিহীন)

ইসলাম শিক্ষা ষষ্ঠ শ্রেণি বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন বড় প্রশ্ন (দৃশ্যপটবিহীন)

ইসলাম শিক্ষা ষষ্ঠ শ্রেণি বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন বড় প্রশ্ন (দৃশ্যপটবিহীন)

ষষ্ঠ শ্রেণি
ইসলাম শিক্ষা
বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন
খ' বিভাগ

খ' বিভাগ: বড় প্রশ্ন (দৃশ্যপটবিহীন)

১) তায়াম্মুমের নিয়ম

তায়াম্মুম হলো পানি না পাওয়া গেলে বা পানি ব্যবহার করতে না পারলে পবিত্রতা অর্জনের বিকল্প পদ্ধতি। এটি নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী পালন করতে হয়।

তায়াম্মুমের নিয়মাবলি:

  1. নিয়ত করা: প্রথমে মনে মনে নিয়ত করতে হবে যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তায়াম্মুম করছেন এবং এটা পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে।
  2. দুই হাত মাটিতে বা ধূলায় দেওয়া: হাতকে পরিষ্কার মাটি, ধূলা বা কোনো শুকনো পবিত্র জিনিসের উপর মেরে নিতে হবে।
  3. মুখমণ্ডল মুছা: প্রথমে দুই হাত দিয়ে সম্পূর্ণ মুখমণ্ডল মুছে নিতে হবে।
  4. হাত মুছা: আবার হাতকে মাটিতে মেরে বা ধূলায় দিয়ে উভয় হাতের কবজি পর্যন্ত মুছতে হবে।

২) সূরা ফাতিহার ৫টি নামের অর্থ

সূরা ফাতিহার বিভিন্ন নাম রয়েছে, যেগুলো সূরাটির গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। ৫টি নাম এবং তাদের অর্থ হলো:

আল-ফাতিহা: অর্থ "সূচনা" বা "উদ্বোধন"। এটি কুরআনের প্রথম সূরা, তাই এর নাম আল-ফাতিহা।
উম্মুল কিতাব: অর্থ "গ্রন্থের মা"। এটি কুরআনের সারসংক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত, তাই একে কুরআনের মূল বলা হয়।
আস-সাব’উল মছানি: অর্থ "সাতবার পঠিত সূরা"। সালাতে প্রতিবার সূরা ফাতিহা পঠিত হয় বলে এই নাম দেওয়া হয়েছে।
আশ-শিফা: অর্থ "আরোগ্য" বা "শিফা"। এটি আত্মিক ও শারীরিক চিকিৎসার জন্য পড়া হয় এবং এটি রুহানি ও শারীরিক রোগ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য বিশেষ ফযিলতপূর্ণ।
আর-রুকিয়া: অর্থ "শিফা অর্জনকারী সূরা"। সূরা ফাতিহা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে দোয়া হিসেবে পঠিত হয়, তাই এটিকে আর-রুকিয়া বলা হয়।

৩) সূরা ইখলাস এর পরিচয় এবং ফজিলত

পরিচয়:

সূরা ইখলাস কুরআনের ১১২ নম্বর সূরা, যার মধ্যে আল্লাহর একত্ব ও বিশুদ্ধতা বর্ণনা করা হয়েছে। এটি মক্কায় অবতীর্ণ সূরা এবং মোট ৪টি আয়াত নিয়ে গঠিত। এই সূরার মাধ্যমে আল্লাহর একত্ববাদ (তাওহীদ) বোঝানো হয়েছে, যা ইসলাম ধর্মের ভিত্তি।

ফজিলত:

এই সূরাটি তিনবার পাঠ করলে কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যায়।
এটি আল্লাহর পরিচয় ও একত্বের বিষয়ে সঠিক ধারণা দেয় এবং মুসলিমদের ঈমানকে শক্তিশালী করে।
সূরা ইখলাস নিয়মিত পাঠ করা আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের উপায় হিসেবে বিবেচিত।

৪) আখলাকে হামিদা কী এবং এর অন্তর্ভুক্ত কাজগুলো

আখলাকে হামিদা অর্থ হলো ভালো বা প্রশংসনীয় চরিত্রগুণাবলি, যা একজন মুসলিমের মধ্যে থাকা উচিত। ইসলামে নৈতিকতা ও উত্তম গুণাবলির উপর অত্যধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং এগুলো মানুষের নৈতিক চরিত্রকে উন্নত করে।

আখলাকে হামিদার অন্তর্ভুক্ত কিছু গুণাবলি:

  • সত্যবাদিতা: সর্বদা সত্য কথা বলা এবং সত্যে অবিচল থাকা।
  • সদাচরণ: মানুষের সাথে নম্রতা ও দয়া প্রদর্শন এবং ভালো ব্যবহার করা।
  • ধৈর্য: জীবনের কঠিন সময়ে ধৈর্য ধারণ করা এবং কষ্ট সহ্য করা।
  • ক্ষমা: অন্যের ভুল মাফ করে দেওয়া এবং প্রতিশোধ না নেওয়া।
  • উদারতা: দরিদ্র ও অসহায়দের সাহায্য করা, দান করা এবং মানবতার সেবা করা।

এই গুণাবলিগুলো মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সফল করে এবং সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

৫) প্রতারণার পরিচয় এবং এর কুফল

প্রতারণা হলো মিথ্যা ও কৌশল ব্যবহার করে অন্যকে ঠকানো বা ধোঁকা দেওয়া। এটি মানুষের পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থার ওপর আঘাত করে।

কুফল:

  • আল্লাহর অসন্তুষ্টি: প্রতারণা একটি গুরুতর পাপ, যা আল্লাহর অসন্তুষ্টি ডেকে আনে।
  • বিশ্বাসহীনতা: সমাজে মানুষের মধ্যে বিশ্বাস ও বন্ধন নষ্ট করে।
  • অশান্তি বৃদ্ধি: প্রতারণার ফলে অন্যের প্রতি সন্দেহ ও দ্বন্দ্ব বাড়ে।
  • সমাজে বিশৃঙ্খলা: প্রতারণা সমাজে প্রতিহিংসা ও অবিশ্বাসের সৃষ্টি করে, যা সমাজকে অস্থিতিশীল করে তোলে।
  • মানসিক যন্ত্রণা: প্রতারিত ব্যক্তি মানসিক আঘাত পায় এবং প্রতারক নিজেও দুশ্চিন্তায় ভুগে।

৬) মাতাপিতার প্রতি ৫টি করণীয়

  1. শ্রদ্ধা ও আনুগত্য: মাতাপিতার কথা মেনে চলা এবং সবসময় তাদের সম্মান করা।
  2. সেবা করা: বয়সে বৃদ্ধ হলে তাদের যত্ন নেওয়া ও দেখভাল করা।
  3. সহযোগিতা: তাদের কাজে সাহায্য করা এবং কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকা।
  4. দোয়া করা: সবসময় তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
  5. সম্মানজনক আচরণ: কখনোই তাদের সাথে দুর্ব্যবহার না করা এবং তাদের সম্মান বজায় রাখা।

৭) গিবত কী? এর কুফল বর্ণনা কর

গিবত হলো কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষ বা ত্রুটি আলোচনা করা। এটি ইসলামে নিষিদ্ধ এবং অত্যন্ত গর্হিত কাজ হিসেবে গণ্য।

গিবতের কুফল:

  • আল্লাহর অসন্তুষ্টি: গিবত করা আল্লাহর কাছে ঘৃণিত, এবং এতে তার অসন্তুষ্টি নেমে আসে।
  • আমল নষ্ট: গিবত করলে সওয়াব কমে যায় এবং আমল ধ্বংস হয়।
  • সমাজে অশান্তি: গিবত মানুষের মধ্যে শত্রুতা ও অসন্তোষ বাড়ায়।
  • বন্ধুত্ব নষ্ট: এটি মানুষের মাঝে বিশ্বাসহীনতা তৈরি করে, বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • পাপ বৃদ্ধি: গিবত করার ফলে নিজের পাপ বেড়ে যায় এবং অন্যের পাপও নিজের আমলে যুক্ত হয়।

৮) মহানবি (সাঃ) এর নবুয়ত লাভের ঘটনা

মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। তিনি হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকাকালে আল্লাহর ফেরেশতা জিবরাইল (আঃ) প্রথমবারের মতো তার কাছে এসে ওহি নিয়ে আসেন। প্রথম ওহি ছিল:

"ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাযি খালাক..." অর্থাৎ "পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।"

এই ঘটনার পর থেকেই নবীজির নবুয়ত জীবনের সূচনা হয় এবং তিনি আল্লাহর একত্ববাদ ও ইসলামের বার্তা প্রচার শুরু করেন। প্রথমে অল্প কয়েকজন তাঁর বার্তায় সাড়া দেন, কিন্তু ধীরে ধীরে ইসলামের দাওয়াত সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

৯) ইমাম আবু হানিফা কেমন মেধাবী ছিলেন?

ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং তীক্ষ্ণবুদ্ধির অধিকারী। তিনি স্মৃতিশক্তিতে অতুলনীয় ছিলেন এবং ছোটবেলা থেকেই জ্ঞানের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তার যুক্তিবোধ ও বিচারশক্তি এত উন্নত ছিল যে, তিনি জটিল বিষয়গুলো সহজে ব্যাখ্যা করতে পারতেন। তিনি ফিকহ (ইসলামী আইন) শাস্ত্রে এতই গভীর পাণ্ডিত্য অর্জন করেন যে, পরবর্তীতে হানাফি মাযহাব প্রতিষ্ঠিত হয়।

১০) মহানবী (সাঃ) এর পরিচয়

মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইসলামের শেষ নবী এবং সর্বশেষ রাসূল। তিনি ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে কুরাইশ গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আব্দুল্লাহ এবং মাতা আমেনা। মাত্র ছয় বছর বয়সে মাতৃহারা হন এবং পরে দাদা আব্দুল মুত্তালিব এবং চাচা আবু তালিবের তত্ত্বাবধানে বড় হন। আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে তিনি "আল-আমিন" (বিশ্বস্ত) এবং "আস-সাদিক" (সত্যবাদী) উপাধিতে ভূষিত হন। ৪০ বছর বয়সে হেরা গুহায় আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি লাভের মাধ্যমে নবুয়ত প্রাপ্ত হন। তিনি ৬৩ বছর বয়সে মদিনায় ইন্তেকাল করেন এবং তার জীবন আল্লাহর বাণী প্রচার ও ইসলামের প্রসারে উৎসর্গ করেন। তাঁর জীবনের উদাহরণ এবং শিক্ষা কুরআন ও সুন্নাহতে প্রতিফলিত, যা মুসলিমদের জীবনধারা নির্ধারণ করে।

১১) ধাত্রী হালিমার গৃহে মহানবি (সাঃ) যাওয়ার পর যা ঘটেছিল

মহানবী (সাঃ) এর জন্মের পর আরবের প্রথা অনুযায়ী তাকে কিছু সময়ের জন্য একটি ধাত্রী মা-র কাছে পাঠানো হয়েছিল যাতে তিনি মরুভূমির নির্মল পরিবেশে বড় হতে পারেন। এই দায়িত্ব পালন করেন ধাত্রী হালিমা সা'দিয়া। তার ঘরে নবীজির যাওয়ার পর থেকেই তাদের পরিবারে আশীর্বাদ নেমে আসে।

কিছু বিশেষ ঘটনা:

  • হালিমা ও তার পরিবারের দুধ, খাদ্য এবং অন্য সম্পদের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। তাদের শুকনো ও মলিন পশুগুলো দ্রুতই দুধে পরিপূর্ণ হয়ে উঠত।
  • মরুভূমির শুষ্ক অঞ্চলেও তাদের খেজুর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে এবং তাদের পরিবারের মধ্যে স্বচ্ছলতা ফিরে আসে।
  • একটি ঐতিহাসিক ঘটনায় বলা হয়, একবার দুই ফেরেশতা এসে নবীজির বক্ষ বিদীর্ণ করে তার অন্তর ধুয়ে পরিশুদ্ধ করেন। এই ঘটনার মাধ্যমে তার অন্তরে পবিত্রতা ও নৈতিক শক্তি সংযোজিত হয়।

Post a Comment