বাস্তব সংখ্যা কাকে বলে | What is Real Number?
আজকের পোস্টে আমরা এই নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো।
বাস্তব সংখ্যা কাকে বলে?
সকল মূলদ ও সকল অমূলদ সংখ্যাকে একত্রে বাস্তব সংখ্যা বলা হয়। তাই যে কোনো বাস্তব সংখ্যা হয় মূলদ সংখ্যা নতুবা অমূলদ সংখ্যা।
বাস্তব সংখ্যার সজ্ঞা কয়েকভাবে দেয়া যায়। পরীক্ষায় আসলে অবশ্যই বইতে যে সজ্ঞা আছে তা দেবে। বইতে থাকা সজ্ঞাটি হলো "সকল মূলদ সংখ্যা এবং অমূলদ সংখ্যাকে বাস্তব সংখ্যা বলে।" এখন এই সজ্ঞাটি বুঝতে হলে আমাদেরকে মূলদ এবং অমূলদ সংখ্যা সম্পর্কে বুঝতে হবে।
আমরা মূলদ সংখ্যা এবং অমূলদ সংখ্যা সম্পর্কে একটু পরেই জানব, একই সাথে আগামী পর্বে আমরা এদেরকে নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত জানার সাথে সাথে এদের মধ্যাকার পার্থক্য এবং মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা চেনার উপায় সম্পর্কেও জানব।
তবে মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা চেনার আগেই তো আমাকে বাস্তব সংখ্যা চিনতে হবে। সেক্ষেত্রে সজ্ঞাটা হবে, "ধনাত্মক সংখ্যা, ঋণাত্মক সংখ্যা এবং শূন্যকে একত্রে বাস্তব সংখ্যা বলে।"
আরও সহজ করে বলতে গেলে বলা যায় "প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহৃত সংখ্যাগুলোকেই বাস্তব সংখ্যা বলে।" বাস্তব সংখ্যার সেটকে R দ্বারা প্রকাশ করা হয় বলে এসএসসি লেভেলে পড়ানো হলেও আসলে একে প্রকাশ করা হয় R দ্বারা।
সমস্ত স্বাভাবিক সংখ্যা, পূর্ণ সংখ্যা, অখণ্ড সংখ্যা, দশমিক ও ভগ্নাংশ এবং মূলদ ও অমূলদ সংখ্যাগুলিকে একত্রে বাস্তব সংখ্যা বলে।
বাস্তব সংখ্যার উদাহরণ
- সকল স্বাভাবিক সংখ্যার উদাহরণ গুলিও বাস্তব সংখ্যার উদাহরণের মধ্যে পড়ে। যেমন- 1, 2, 3…..40,..50,..1000,….106780…
- আবার সকল পূর্ণ সংখ্যার উদাহরণ গুলিও বাস্তব সংখ্যার উদাহরণ। যেমন- ……,-3,-2,-1,0,1,2,3,4……
- সকল মূলদ সংখ্যার উদাহরণগুলি ও বাস্তব সংখ্যার উদাহরণ। যেমন- 1/2, 2/3, -5/6 ,8/25, 17/356
- সকল অমূলদ সংখ্যার উদাহরণ গুলিও বাস্তব সংখ্যার উদাহরণ। যেমন- √2, √3, √5,….0.10101110111110
বাস্তব সংখ্যার শ্রেণিবিন্যাস
বাস্তব সংখ্যাকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলি হল-
- মূলদ সংখ্যা
- অমূলদ সংখ্যা
মূলদ সংখ্যাকে আবার দু ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
- পূর্ণ সংখ্যা
- ভগ্নাংশ
পূর্ণ সংখ্যাকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায় । যথা
- ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা
- শূন্য (0)
- ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা
ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
- মৌলিক সংখ্যা
- এক (1)
- যৌগিক সংখ্যা
ভগ্নাংশকে দু ভাগে ভাগ করা হয় যথা
- সাধারণ ভগ্নাংশ
- দশমিক ভগ্নাংশ
সাধারণ ভগ্নাংশকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলি হল-
- প্রকৃত ভগ্নাংশ
- অপ্রকৃত ভগ্নাংশ
- মিশ্র ভগ্নাংশ
দশমিক ভগ্নাংশকে দু’ভাগে ভাগ করা হয় সেগুলি হল
- সসীম ভগ্নাংশ
- অসীম আবৃত
অমূলদ সংখ্যাকে এক ভাগে ভাগ করা হয়। যথা
- অসীম অনাবৃত দশমিক সংখ্যা
বাস্তব সংখ্যার সেটকে কি দিয়ে প্রকাশ করা হয়
বাস্তব সংখ্যার সেটকে ইংরেজি বর্ণমালার ‘R’ অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত বা প্রকাশ করা হয়। বাস্তব সংখ্যাকে ইংরেজিতে Real Number বলা হয়।
প্রতিটি বাস্তব সংখ্যার জন্যই সরলরেখায় একটি নির্দিষ্ট বিন্দু পাওয়া যায়। আবার সরলরেখায় প্রতিটি বিন্দুর জন্য একটি নির্দিষ্ট বাস্তব সংখ্যা পাওয়া যায়। তাই সরলরেখাকে বাস্তব সরলরেখা বলা হয়।
বাস্তব সংখ্যাগুলোকে অসীম দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট সংখ্যারেখার অসংখ্য বিন্দু হিসেবে প্রকাশ করা হয়। 1870 সালে দুই জার্মান গণিতজ্ঞ ক্যান্টর ও ডেডিকাইন্ড (Cantor ও Dedekind) এই বক্তব্যটিকে স্বতসিদ্ধ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
বাস্তব সংখ্যা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম
- যদি X ও Y যেকোনো দুটি বাস্তব সংখ্যা হয় তবে X
-
(i) X = Y, Y = Z => X = Z
(ii) X < Y, Y < Z => X < Z
(যেমন 3 < 5 ও 5 < 11=> 3 < 11 ) X, Yও Z তিনটি বাস্তব সংখ্যা। -
(i) X = Y => X + Z = Y + Z
(ii) X < Y => X + Z < Y + Z (যেমন 3 < 5 => 3 + 4 < 5 + 4 ) X, Yও Z তিনটি বাস্তব সংখ্যা। -
(i) X = Y => X × Z = Y × Z
(ii) X < Y এবং Z > 0 => X × Z < Y × Z ( যেমন 3 < 5 => 3 × 4 < 5 × 4 কিন্তু 3 < 5 => 3 × (-4) > 5 × (-4))
উপরের নিয়মগুলি বাস্তব সংখ্যা ক্রম সংক্রান্ত স্বতসিদ্ধ।
(A) যেকোনো দুটি বাস্তব সংখ্যার যোগফলও একটি বাস্তব সংখ্যা।
ধরি, যেকোনো দুটি বাস্তব সংখ্যা √2 ও 2√2।
√2 + 2√2 = 3√2 (বাস্তব সংখ্যা )
(B) যেকোনো দুটি বাস্তব সংখ্যার বিয়োগফল ও একটি বাস্তব সংখ্যা।
√2 – 2√2 = -√2 (বাস্তব সংখ্যা )
(C) যেকোনো দুটি বাস্তব সংখ্যার গুণফলও একটি বাস্তব সংখ্যা।
√2 × 2√2 = 2 × 2= 4 (বাস্তব সংখ্যা )
(D) যেকোনো দুটি বাস্তব সংখ্যার ভাগফল ও একটি বাস্তব সংখ্যা (যদিভাগের সময় ভাজক শূন্য না হয়)।
√2 ÷ 2√2 = 1/2 (বাস্তব সংখ্যা )
যেকোনো তিনটি বাস্তব সংখ্যার a, b ও c নিয়মগুলি
- (a + b ) + c = a + (b + c) [যোগের সংযোগ নিয়ম]
- a + b = b + a [যোগের বিনিময় নিয়ম]
- (a × b) × c = a ×( b × c) [গুণের সংযোগ নিয়ম]
- a × b = b × a [গুণের বিনিময় নিয়ম]
- a ( b + c) = ab +ac এবং (a + b) c = ac + bc [বিচ্ছেদ নিয়ম]
- a + 0 = a এবং 0 + a = a [ 0 কে যোগের একসম উপাদান (additive identity element)বলা হয়]
- a × 1=1এবং 1 × a = a[1কে গুণের একসম (multiplicative identity element) উপাদান বলা হয়]
- a + (-a ) = 0 এবং (- a ) + a = 0 [-a কে যোগের সাপেক্ষে a এর বিপরীত উপাদান(inverse element) বলা হয়]
- a × 1/a = 1 এবং 1/a × a =1 (যদি a ≠ 0 হয় ) [ 1/a কে গুণের সাপেক্ষে a- এর বিপরীত উপাদান ( inverse element) বলা হয়।]
নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন
If any objections to our content, please email us directly: helptrick24bd@gmail.com